আশা শিল্পমহলের

জঙ্গি হামলা ছাপ ফেলবে না পর্যটনে

দেশে বায়ুসেনার ঘাঁটিতেই ঢুকে পড়েছিল জঙ্গিরা। পঠানকোটের ওই সেনা ঘাঁটি অবশেষে জঙ্গিমুক্ত বলে সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হলেও, এই ঘটনা প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিয়েছে পর্যটন শিল্পের সামনে। সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশ্ন উঠেছে, এই পরিস্থিতিতে ভারতে বেড়াতে আসতে রাজি হবেন ক’জন বিদেশি পর্যটক?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৬ ০২:৪০
Share:

দেশে বায়ুসেনার ঘাঁটিতেই ঢুকে পড়েছিল জঙ্গিরা। পঠানকোটের ওই সেনা ঘাঁটি অবশেষে জঙ্গিমুক্ত বলে সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হলেও, এই ঘটনা প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিয়েছে পর্যটন শিল্পের সামনে। সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশ্ন উঠেছে, এই পরিস্থিতিতে ভারতে বেড়াতে আসতে রাজি হবেন ক’জন বিদেশি পর্যটক? ভারতীয় পর্যটন কি ব্যবসা হারাবে? পর্যটন শিল্পমহলের অবশ্য দাবি, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ এ দেশে বিদেশি পর্যটকের ঢল ঠেকাতে পারবে না। অন্তত গত কয়েক বছরের হিসেব বলছে, এ দেশ ভ্রমণে আসা পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে।

Advertisement

ভারতে পর্যটনের সম্ভাবনা নিয়ে ইন্ডিয়ান চেম্বারের এক সভার পরে ‘দ্য ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুর অপারেটর্স (আইওটিও)–এর প্রেসিডেন্ট সুভাষ গোয়েলকে দেশের সাম্প্রতিক জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, এ জন্য কেন ভারতে সম্পর্কে আগ্রহ হারাবেন বিদেশি পর্যটকেরা? ফ্রান্স, ব্রিটেন, জাপান, কোন দেশে জঙ্গি কার্যকলাপ নেই? বিশ্বের সর্বত্রই তো সন্ত্রাস চলছে। তাও প্যারিস পর্যটকদের কাছে বিশ্বের অন্যতম সেরা গন্তব্য। বাদ নেই অন্যান্য দেশও।’’

পর্যটন মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালে দেশের বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ১.৮২ কোটিরও বেশি বিদেশি পর্যটক এসেছিলেন। পরের দু’বছরে তা বেড়ে হয় ১.৯৯ কোটি ও ২.২৫ কোটিরও বেশি। ২০১৪ সালে বিদেশি পর্যটক টানার দৌড়ে দেশের প্রথম দশটি রাজ্যের মধ্যে তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি-রাজস্থানের পরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। ২০১২ সালে বিদেশি পর্যটকদের সূত্রে ভারত ৯৪.৪৮ হাজার কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রা আয় করেছিল। পরের দু’বছরে তা বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ১.০৭ এবং ১.২৩ লক্ষ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, সম্প্রতি বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের এক সমীক্ষাতেও বলা হয়েছিল, বর্ষশেষ ও নতুন বছরের ছুটির মরসুমে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে। তবে ভিড় বাড়লেও এখন গোটা বিশ্বে বিদেশি পর্যটকদের মাত্র ০.৬৫% ভারতে আসেন বলে জানান উপদেষ্টা সংস্থা কেপিএমজি-র অন্যতম কর্তা জয়দীপ ঘোষ। কেন্দ্রের লক্ষ্য, ২০৩০-এর মধ্যে তা ২ শতাংশে নিয়ে যাওয়া।

Advertisement

বস্তুত, কর্মসংস্থানের সমস্যা বা দারিদ্রকেই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের মূল সূত্র হিসেবে দেখছে পর্যটন শিল্পমহল। সুভাষের দাবি, সে সবেরই সুযোগ নিয়ে কিছু মানুষকে এ ধরনের কাজে যুক্ত করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘আমি জম্মু ও কাশ্মীরে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরাও চান সেখানে পর্যটনের প্রসার ঘটুক। পর্যটন হলেই বরং এ ধরনের কার্যকলাপ কমবে। কারণ পর্যটনের কোনও ধর্মীয় গণ্ডি নেই।’’

প্রশ্ন ওঠে, অনেক দেশই কূটনৈতিক স্তরে ভারতে না-আসার সতর্কবার্তা জারি করে। সে ক্ষেত্রে পর্যটকদের আস্থা কতটা অটুট থাকবে? সুভাষবাবু জানাচ্ছেন, তাঁরা সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলে গোটা বিষয়টি ব্যাখ্যা করে পর্যটকদের আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করেন। পাশাপাশি রাজ্য স্তরেও এ নিয়ে উদ্যোগের পক্ষে সওয়াল করেন তিনি। সুভাষবাবু বলেন, ‘‘সব রাজ্যকে আমরা বলছি, নিজেদের বিপণন করতে বা স্লোগান প্রচার করতে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement