gold

Gold market: ক্রয়ক্ষমতা কমেছে, বাড়ছে সোনা পুনর্ব্যবহারের ঝোঁক

গয়না ব্যবসায়ীরা বলছেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমার প্রতিফলন স্পষ্ট সোনার বাজারে। পুরনো সোনা ভাঙিয়ে নতুন কেনার ঝোঁক গত দু’বছরে বেড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২২ ০৭:৪৮
Share:

ফাইল ছবি

কারও রুজি কেড়েছিল অতিমারি, কারও কমিয়েছিল রোজগার। কোভিডের চিকিৎসা করাতে জলের মতো টাকা বেরিয়েছে বহু পরিবারের। সংক্রমণ কমতে না কমতেই জ্বালানি থেকে খাদ্য-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পণ্যের চড়া মূল্যবৃদ্ধিতে সংসার খরচ লাফিয়ে বেড়েছে মানুষের। স্বর্ণ শিল্পমহলের দাবি, এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ রোজগেরেরা সোনা কেনার কথা ভাববেন কী করে! বিশেষত তার দামও যেহেতু চড়া। গয়না ব্যবসায়ীরা বলছেন, সব মিলিয়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমার প্রতিফলন স্পষ্ট সোনার বাজারে। ভারতে বরাবর পুরনো সোনা ভাঙিয়ে নতুন কেনার ঝোঁক থাকলেও, গত দু’বছর ধরে সেটা চোখে পড়ার মতো বাড়ছে।

Advertisement

অতিমারির মধ্যেই কলকাতার বাজারে ১০ গ্রাম পাকা সোনার দাম পেরিয়েছিল ৫৬,০০০ টাকা। হালে তা কিছুটা কমলেও, ৫০ হাজারের নীচে নামেনি। স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি সমর দে বলেন, আর্থিক ক্ষমতা নির্বিশেষে ঐতিহ্যগত ভাবে ভারতীয়দের সোনার প্রতি বিশেষ টান রয়েছে। বিয়েতে তো বটেই, হাতে অতিরিক্ত কিছু পয়সা এলেও অনেকে গয়না কেনেন। কেউ কেউ ছেলেমেয়ের ভবিষ্যতের ব্যবস্থা করে রাখতে চান। কিন্তু কোভিড হানার পর থেকেই সেই বিক্রিতে ভাটার টান। প্রয়োজন বা উৎসবে কিনছেন যাঁরা, তাঁদের বড় অংশ ঘরের সোনার পুনর্ব্যবহার করছেন খরচ বাঁচাতে। একমত গয়না ব্যবসায়ী নেমিচাঁদ বামালুয়া অ্যান্ড সন্সের পার্টনার বাছরাজ বামালুয়াও।

ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের (ডব্লিউজিসি) এক রিপোর্টেও বলা হয়েছে, পুরনো সোনা বিক্রি করে নতুন গয়না তৈরি বা রিসাইক্লিংয়ের নিরিখে গত বছর বিশ্বে চতুর্থ হয়েছে ভারত। ৭৫ টন সোনার পুনর্ব্যবহার হয়েছে। চিন প্রথম, পুনর্ব্যবহার হয়েছে ১৬৮ টন সোনা। ৮০ টন নিয়ে ইতালি দ্বিতীয়। আমেরিকা তৃতীয়, পুনর্ব্যবহার ৭৮ টন। বামালুয়ার মতে, ‘‘মানুষের হাতে অর্থের অভাব। সোনার দামও চড়া। বিয়ে বা অন্য কোনও প্রয়োজনে গয়না কিনতে হলে পুরনো ভাঙিয়ে আর্থিক বোঝা কমানো ছাড়া উপায় কি? এই প্রবণতা এখনও চলছে। সোনার রিসাইক্লিনিং বৃদ্ধি পাওয়ার এটা অন্যতম কারণ।’’

Advertisement

ডব্লিউজিসি-র ভারতের সিইও সোমসুন্দরম পিআর অবশ্য মনে করেন, এ দেশে গয়না গড়িয়ে তা বেশি দিন ধরে রাখার রেওয়াজ ক্রমশ কমবে। কারণ, একটা বড় অংশের মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা বেড়েছে। যাঁদের বয়স কম, তাঁরা আবার পুরনোগুলি বেচে নতুন নকশার গয়না গড়ানোর পক্ষপাতী। অ্যাসোসিয়েশন অব গোল্ড রিফাইনারিজ় অ্যান্ড মিন্টসের সম্পাদক হর্ষদ আজমেঢ়ার মতে, ভারতে সোনার মোট চাহিদা মেটাতে শুধু আমদানি যথেষ্ট নয়। পুরনো সোনাও ব্যবহার করতে হয়। তিনি জানান, ‘‘মোট যত সোনা আমদানি হয়, তার ২৫-৩০ শতাংশ পুরনো সোনা রিসাইক্লিনিং হয়। তবে এটা ঠিক কোভিড আসার পরে সেই হার বেশ খানিকটা বেড়েছে।’’

ক্রয়ক্ষমতা কমা এর বড় কারণ, বলছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ান মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়োলার্স আ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দীনেশ খাবরা। তবে তাঁর দাবি, ‘‘দেশে সোনার বিশাল ভান্ডার মজুত। বহু পরিবারে রোজগার হয়তো বেশি নয়, কিন্তু সোনার পুঁজি তাক লাগানো। কারণ একে সুরক্ষার বর্ম হিসেবে দেখা হয়। ফাঁপড়ে পড়ে অনেকে সেই সোনা বার করছেন। নতুন কিনছেন কম। মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামালে, মানুষের আয় বাড়লে এই ছবিটা ফের বদলাতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement