মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। — ফাইল চিত্র।
নতুন টেলিযোগাযোগ আইন তৈরি হলে মোবাইল ফোনের সাহায্যে প্রতারণা, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি, সাইবার জালিয়াতির মতো অপরাধ কমবে বলে দাবি করলেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
কেন্দ্রীয় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রক সম্প্রতি এ সংক্রান্ত নতুন বিলের খসড়া প্রকাশ করেছে। আজ বৈষ্ণব বিলের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, মোবাইল ও নেট ব্যবহারকারী মানুষের সুরক্ষার কথা ভেবেই নতুন টেলিযোগাযোগ বিলের খসড়া তৈরি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি, মোবাইলে কে ফোন করছে সেটা জানা এখন অধিকারের মধ্যে পড়বে। এত দিন সংযোগ নেওয়ার আগে কেওয়াইসি (নো ইয়োর কাস্টমার) সংক্রান্ত বিধিনিয়ম যথেষ্ট আলগা ছিল। ফলে ভুয়ো নথি দিয়ে বা নথি ছাড়াই ফোনের সিমকার্ড মিলত। এ বার সঠিক তথ্য দেওয়ার বিষয়টি মোবাইল ব্যবহারকারীদের আইনি দায়বদ্ধতা হিসেবে গণ্য হবে। অযাচিত মেসেজ আটকানো, ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ পরিষেবা, যিনি ফোন করছেন, তাঁর পরিচিতি জানার ব্যবস্থা হবে। সবটাই গ্রাহকদের সুরক্ষার কথা ভেবে। সাইবার এবং আর্থিক প্রতারণা ঠেকাতে অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থাও তৈরি হবে দেশে।
মোদী সরকার চাইছে, ব্রিটিশ জমানার টেলিগ্রাফ আইন, ওয়্যারলেস টেলিগ্রাফি আইন এবং স্বাধীনতার পরেই তৈরি টেলিগ্রাম তার আইন হঠিয়ে নতুন টেলিযোগাযোগ আইন আনতে। কিন্তু তার বিলে মোবাইল-ইন্টারনেটে নজরদারির সুযোগ তৈরি হচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
‘ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশন’-এর মতে, এ বার থেকে হোয়াটসঅ্যাপ, সিগনাল, জ়ুমের মতো ইন্টারনেটভিত্তিক পরিষেবা সংস্থা এবং ওটিটি সংস্থাগুলিকেও কেন্দ্রের থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। এতে টেলিকম সংস্থাগুলির জয় হল। কিন্তু পরাজিত হল গ্রাহকদের অধিকার। টেলিগ্রাফ আইনে যে নজরদারির ক্ষমতা ছিল, তা আরও বাড়ানো হয়েছে। টেলিযোগাযোগ পরিষেবা ও নেটওয়ার্কে নজরদারির কথা বলা হয়েছে। ফলে এখন যে সব মেসেজে ‘এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন’-এর ফলে নজরদারি চালানো যায় না, সেখানেও নিয়ন্ত্রণের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, যখন-তখন নেট পরিষেবা বন্ধ করার আইনি ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অবশ্য জবাব, নজরদারির বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এবং ব্যক্তিগত পরিসরের অধিকারের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনেই আইন তৈরি হয়েছে।