—প্রতীকী চিত্র।
কোনও বাগানের পাতা ঝলসে যাচ্ছে, কোথাও গাছ শুকিয়ে মৃতপ্রায়। কোথাও রোগপোকার আক্রমণ বাড়ছে। এ বছর উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন চা বাগানে দেখা যাচ্ছে এই ছবি। যার কারণ হিসেবে তীব্র গরমকে দায়ী করছে বাগান মালিক সংগঠনগুলি। তাদের বক্তব্য, গরমে নতুন পাতা না ওঠায় ক্ষতির মুখে তরাইয়ের একাধিক চা বাগান। লোকসানের আশঙ্কায় অনেক বাগানে শ্রমিকদের কাজ কমানোর অভিযোগ উঠছে। কোথাও বাগান বন্ধ না হলেও কাজ থমকে। ফলে সমস্যায় পড়ছেন শ্রমিকেরা।
রবিবার মহকুমার নকশালবাড়ি চা বাগানে শ্রমিকেরা কাজে গেলেও তাঁদের ফিরে আসতে হয়েছে বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, মালিকপক্ষের তরফে বাগানে ক্ষতির আশঙ্কার কথা তুলে আপাতত কাজ বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। ওই বাগানে প্রায় ১২০০ স্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন। এই সময় কাজ হারালে তাঁরা বিপদে পড়বেন বলে জানান শ্রমিকেরা। মালিকপক্ষের দাবি, স্থায়ী শ্রমিকদের সপ্তাহে তিন দিন করে কাজ দেওয়ায় আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। নকশালবাড়ি চা বাগানের ম্যানেজার মৃণ্ময় কুণ্ডু বলেন, ‘‘শ্রমিকদের কাজ করালে তো মজুরি দিতে হবে। পাতা না উঠলে মজুরি মিলবে কী ভাবে?’’
তরাইয়ের বহু বাগানে শ্রমিকেরা কাজ কমানোর অভিযোগ তুলছেন। এই অবস্থায় বাগান মালিক সংগঠনগুলির দাবি, গত বছরের চেয়ে গত এক মাসে ৫০% বৃষ্টি কম হয়েছে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। রোদের তাপে বাগানে পাতা ঝলসে যায়। নতুন পাতা গজানো কমে। কিছু বাগানে গাছ মরেও যাচ্ছে। চলতি মরসুমে ৩০% উৎপাদন কমেছে বলে মালিকদের দাবি। এর জেরেই কাজ কমছে।
তরাই শাখা ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের তরফেও রাজ্যের শ্রম দফতর, জেলা প্রশাসন, উন্নয়ন মন্ত্রীকে বিষয়গুলি তুলে ধরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সংস্থার সচিব রানা দে বলেন, ‘‘আমরা কখনও বাগান বন্ধ বা মজুরি বন্ধের কথা বলিনি। গরমের জেরে বাগানের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।’’ সিটুর দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম ঘোষের দাবি, ‘‘সরকারের সহযোগিতা ছাড়া বাগানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা মুশকিল।’’ আইএনটিটিইউসি’র দার্জিলিং জেলা সভাপতি নির্জল দে বলেন, ‘‘পরিস্থিতি বদল হবে বলে আশা করা যায়। কোনও বাগান বন্ধ হবে না তা সুনিশ্চিত রাখতে হবে।’’