—ফাইল চিত্র।
২,২৮৪। ১,৯২১।
প্রথমটা দিনের লেনদেনের মাঝে সেনসেক্সের উত্থানের নতুন রেকর্ড। আর পরেরটা গত এক দশকের মধ্যে দিনের শেষে সূচকটির সব চেয়ে লম্বা লাফ। আর শুক্রবার শেয়ার বাজারের এই ছবিই স্বস্তি ফেরাল বহু লগ্নিকারীরা মনে। সৌজন্যে এ দিন অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তুলতে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের চতুর্থ দফার ঘোষণা। যদিও বিশেষজ্ঞদের একাংশের প্রশ্ন, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ অর্থনীতিতে চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে কি? তা না-হলে ও বৃদ্ধিতে গতি না-এলে বাজারের এই চাঙ্গা ভাব শেষ পর্যন্ত বহাল থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে।
এ দিন নির্মলার সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘোষণাগুলির মধ্যে রয়েছে এক ধাক্কায় কর্পোরেট কর অনেকটা ছাঁটাই, কিছু ক্ষেত্রে ন্যূনতম বিকল্প কর তুলে নেওয়া, বাজেটে ঘোষণা করা সারচার্জের একাংশ তোলা ইত্যাদি। যার জেরে রকেট গতিতে বেড়ে সেনসেক্স থামল ৩৮,০১৪.৬২ অঙ্কে। নিফ্টি ৫৬৯.৪০ পয়েন্ট বেড়ে ১১,২৭৪.২০ অঙ্কে।
উল্লেখ্য, ৫ জুলাই দ্বিতীয় দফার মোদী সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেটে সারচার্জ বাড়ানোর কথা ঘোষণার পর থেকে টানা শেয়ার বিক্রি করেছে বিদেশি লগ্নিকারীরা। যার মধ্যে মাঝেমধ্যেই টালমাটাল হয়েছে বাজার। এ নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধীরা। এই অবস্থায় অর্থনীতি ও বাজারকে চাঙ্গা করতে ২৩ অগস্ট থেকে টানা দাওয়াই দিচ্ছে কেন্দ্র।
লাফ
• এক ধাক্কায় সেনসেক্স বাড়ল ১,৯২১.১৫ পয়েন্ট। থামল ৩৮,০১৪.৬২ অঙ্কে।
• এর আগে ২০০৯ সালের ১৮ মে তা বেড়েছিল ২,১১১ পয়েন্ট।
• শুক্রবার এক সময়ে সেনসেক্স ওঠে ২,২৮৪.৫৫ পয়েন্ট। দিনের মধ্যে এর আগে কখনও এতটা
বাড়েনি ওই সূচক।
• নিফ্টিও ৫৬৯.৪০ পয়েন্ট বেড়ে পৌঁছোয় ১১,২৭৪.২০ অঙ্কে।
• ২০০৯ সালের ১৮ মে ৭১৩ পয়েন্ট বেড়েছিল এনএসই-র সূচকটি।
• শুক্রবার এক দিনেই লগ্নিকারীদের সম্পদ বেড়েছে ৬.৮ লক্ষ কোটি।
• এ দিন বেড়েছে ডলারের সাপেক্ষে টাকার দরও। ৪০ পয়সা পড়ে প্রতি ডলার দাঁড়িয়েছে ৭০.৯৪ টাকা।
তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই মতে, এ দিনের উত্থান করে ছাড় মেলার তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া। বাজারে স্থিতিশীলতা তখনই আসবে, যখন দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি আসবে। সুমেধা ফিসকাল সার্ভিসেসের ডিরেক্টর বিজয় মাহেশ্বরী বলেন, ‘‘বাজারকে চাঙ্গা রাখতে হলে শিল্পের বাদবাকি সমস্যাগুলির সুরাহার জন্য সরকারি পদক্ষেপ জরুরি। বজায় রাখতে হবে আর্থিক সংস্কারের গতিও।’’
স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজ়ের কর্ণধার কমল পারেখ বলেন, ‘‘এই পদক্ষপ চাহিদা বাড়াতে কতটা সাহায্য করে, তা দেখতে হবে। না হলে তা সুফল দেবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। এই ঘোষণায় বছরে ১.৪৫ লক্ষ কোটি
টাকা রাজস্ব হারাবে সরকার। যা ঘাটতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।’’ দেকো সিকিউরিটিজ়ের কর্ণধার অজিত দের মতে, কর কমিয়ে চাহিদা বাড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্র। সংস্থাগুলি তার কতটা সদ্ব্যবহার করে, সেটাই এখন দেখার।