ফাইল চিত্র।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই এ মাসের গোড়ায় ইন্ডিয়ান অয়েলের (আইওসি) মৌড়িগ্রাম ডিপোয় ধর্মঘট ডেকেছিলেন ট্যাঙ্কার মালিকেরা। গত ৭ অগস্ট সেই ধর্মঘট স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিলেও, ভবিষ্যতে আবারও তা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ট্যাঙ্কার মালিকদের সংগঠন। শনিবার সকাল থেকে সেই মৌড়িগ্রাম ডিপোতেই ফের ট্যাঙ্কার ধর্মঘট শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, প্রায় ৩৫০টি ট্যাঙ্কার বসে গিয়েছে সেখানে। এর ফলে কলকাতা ও সংলগ্ন পাঁচ জেলায় পেট্রল-ডিজ়েলের সরবরাহে টান পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল। আইওসি-র অভিযোগ, সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা চলছিল। এর মধ্যেই ‘আচমকা’ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তাদের অবশ্য দাবি, জ্বালানির জোগান যাতে ব্যাহত না-হয়, তার জন্য বিকল্প সূত্র থেকে তা সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মৌড়িগ্রাম থেকে পেট্রল-ডিজ়েলের ট্যাঙ্কার পরিবহণের নতুন দরপত্রের শর্তে আইওসি গাড়ির সংখ্যা ও গাড়ি পিছু খরচ কমাচ্ছে, এই অভিযোগে গত ৫ অগস্ট থেকে ধর্মঘটে নামে ট্যাঙ্কার অ্যাসোসিয়েশন। এ দিন তাদের স্থানীয় শাখার সম্পাদক রাজকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দরপত্রে একাধিক নতুন নিয়ম আনা হয়েছে। পরিবহণ খরচ কমানো হয়েছে অস্বাভাবিক হারে। এই সমস্ত কিছুর প্রতিবাদেই ধর্মঘট।’’ কিন্তু এই ধর্মঘটের বিরূপ প্রভাব তো সাধারণ মানুষের উপরে পড়বে। সমস্যার কথা মেনে নিয়েও রাজকুমারবাবুর বক্তব্য, ‘‘দরপত্রের শর্ত মেনে কাজ করতে হলে আমাদেরই সংসার চলবে না। তবে আশা করি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।’’
আইওসি অবশ্য এখনও পর্যন্ত বিকল্প পথেই সমাধানের চেষ্টা করছে। সংস্থা সূত্রের দাবি, ধর্মঘটের জেরে ক্রেতাদের যাতে ভোগান্তির শিকার হতে না-হয়, তার জন্য এ দিন সকাল থেকেই হলদিয়া এবং রাজবাঁধের ডিপো থেকে তেলের জোগান শুরু হয়েছে। পেট্রল পাম্পে টান পড়ার আশঙ্কা নেই। কাজ চলছে নির্বিঘ্নে।
তবে পাম্প মালিকদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্রসেনজিৎ সেন জানিয়েছেন, ধর্মঘট টানা চলতে থাকলে বহু পাম্পেই তেলের জোগান নিয়ে সংশয় তৈরি হতে পারে। মাসের শেষে তেল সংস্থা তাঁদের যে বাড়তি জ্বালানি কেনার বরাত দেয়, বিঘ্নিত হতে পারে তা-ও। সে ক্ষেত্রে পাম্পগুলির পাশাপাশি তেল সংস্থারও আর্থিক লোকসান হবে। গত বারও অন্য জায়গা থেকে পাম্পে তেল সরবরাহের পরিকল্পনা করেছিল আইওসি। তাতে ট্যাঙ্কার অ্যাসোসিয়েশন চাপে পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রসেনজিৎবাবু জানান, এ দফায় সংস্থার নির্দেশ মতো ডিলাররা নিজস্ব গাড়ি অন্য ডিপো থেকে তেল আনার পরিকল্পনা করলে সেই গাড়িগুলিকে মৌড়িগ্রামে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ট্যাঙ্কার সংগঠনটি।