শুনানি আজ

মাল্যের ভারত ছাড়া রুখতে সুপ্রিম কোর্টে ঋণদাতারা

বিজয় মাল্য যাতে ভারত ছেড়ে যেতে না-পারেন, সে জন্য এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল বন্ধ কিংফিশার এয়ারলাইন্সের ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলি। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে এই আবেদন জানিয়েছে এসবিআই-সহ ১৩টি ব্যাঙ্ক।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৬ ০৩:১৪
Share:

বিজয় মাল্য যাতে ভারত ছেড়ে যেতে না-পারেন, সে জন্য এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল বন্ধ কিংফিশার এয়ারলাইন্সের ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলি। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে এই আবেদন জানিয়েছে এসবিআই-সহ ১৩টি ব্যাঙ্ক। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির পক্ষ থেকে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহাতগি। বুধবার এই মামলার শুনানি হবে বলে এ দিন জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি টি এস ঠাকুর এবং বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের বেঞ্চ। এ দিকে, ব্যাঙ্কগুলির এই পদক্ষেপকে এ দিন সমর্থন জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও।

Advertisement

প্রসঙ্গত, সোমবারই ইউনাইডেট স্পিরিটস (ইউএসএল) ছাড়ার জন্য ডিয়াজিও-র কাছ থেকে প্রাপ্য ৭.৫ কোটি ডলার (প্রায় ৫১৫ কোটি টাকা) মাল্য হাতে পাবেন না বলে নির্দেশ দিয়েছে বকেয়া ব্যাঙ্কঋণ আদায় ট্রাইব্যুনাল (ডিআরটি)। যত দিন না ঋণের টাকা ফেরত পেতে ২০১৩ সালে স্টেট ব্যাঙ্কের দায়ের করা মূল মামলার নিষ্পত্তি হয়, তত দিন সেই টাকা ডিয়াজিওকে না-মেটাতেও বলেছে তারা। অন্য দিকে, বেআইনি ভাবে টাকা সরানোর অভিযোগে কিংফিশার এয়ারলাইন্স কর্তার বিরুদ্ধে কালো টাকা প্রতিরোধ আইনে মামলাও করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

এ দিন কিংফিশারের ঋণ প্রসঙ্গে জেটলি বলেন, কর্পোরেটগুলিকে দেওয়া ব্যাঙ্ক ঋণের শেষ পয়সা পর্যন্ত আদায় করা উচিত। তাঁর মতে, ১৫ থেকে ২০ জন ব্যক্তি ব্যাঙ্ক ঋণের বিপুল অংশ নিয়ে বসে থাকলে অন্যদের ধার পেতে সমস্যা হয়। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের টাকাই ব্যাঙ্কে জমা থাকে। ফলে ঋণ ফেরত না-দেওয়ার বিষয়টি সামগ্রিক ভাবে ব্যাঙ্ক, কেন্দ্র ও আমানতকারীদের উপর সমান ভাবে প্রভাব ফেলে। যে-কারণে ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কগুলি যে -ব্যবস্থাই নিক না কেন, কেন্দ্র তাদের পাশে থাকবে বলে দাবি করেন জেটলি। তাঁর বক্তব্য, ঋণ সময়ে শোধ না-করতে পারার বিষয়টি দু’ধরনের। প্রথম ক্ষেত্রে দুর্বল আর্থিক অবস্থার কারণে সংস্থাগুলি সময়ে ঋণ ফেরাতে পারে না। কিন্তু সম্পদ বিক্রি করে বা অন্য ভাবে সেই চেষ্টা করে তারা। এ ক্ষেত্রে সংস্থাগুলির প্রতি নরম মনোভাব নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু দ্বিতীয় অবস্থায় ঋণ নেওয়ার পরে ইচ্ছা করে তা ফেরত না-দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায় গ্রহীতার মধ্যে। সেই টাকা উদ্ধারের জন্য আইনত যা যা ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব— তাই করা উচিত বলে এ দিন জানান তিনি।

Advertisement

এ দিকে মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসে মাল্যকে খোলা চিঠি দিলেন কিংফিশারের মহিলা কর্মীরাও। সম্প্রতি নিজের সমর্থনে বেশ কিছু যুক্তি সাজিয়েছিলেন মাল্য। জানিয়েছিলেন ঋণ সংক্রান্ত ঝামেলা মেটাতে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছেন তিনি। এমনকী ভারত ছাড়ার ইচ্ছাও তাঁর নেই এবং তিনি কোনও ভাবেই আত্মগোপন করতে চান না বলেও দাবি করেছিলেন মাল্য। মঙ্গলবার সেই দাবিই খারিজ করে মাল্যকে কর্মীদের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।

উল্লেখ্য, শনিবারই মাল্যের কাছে খোলা চিঠি পাঠিয়েছিলেন কিংফিশার এয়ারলাইন্সের এক কর্মী। ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে বন্ধ থাকা সংস্থাটির বহু কর্মীই এখনও বকেয়া বেতন পাননি। চিঠিতে তাঁর দাবি ছিল, মাল্যের ঢিলেঢালা মনোভাব কর্মীদের জীবনে অন্ধকার ডেকে এনেছে। তাঁর এবং কিংফিশারের ঋণখেলাপির জেরে অন্যান্য বিমান পরিষেবা সংস্থাও ঋণ পেতে অসুবিধার মধ্যে পড়ছে। এমনকী মাল্যর আচরণে সামগ্রিক ভাবে দেশের এবং বিমান শিল্পের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও চিঠিতে অভিযোগ আনেন
ওই কর্মী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement