ছবি: সংগৃহীত।
মোরাটোরিয়ামের (ঋণের কিস্তি স্থগিত) আওতায় থাকা ঋণগুলিতে সুদের উপর সুদ ছাড়ের যে প্রস্তাব কেন্দ্র পেশ করেছে, তাতে খুশি নয় সুপ্রিম কোর্ট। সোমবারের শুনানিতে তাদের স্পষ্ট বার্তা, মার্চ থেকে ছ’মাস স্থগিত থাকা ইএমআইয়ে সুদ ও সুদের উপর সুদ মকুবের আর্জিতে যে মামলা করেছে ঋণগ্রহীতারা, তার প্রেক্ষিতে সরকারের জবাবে প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যার অভাব আছে। সব বিরোধের সমাধানও করতে পারেনি তাদের প্রস্তাব। ভেবে দেখা হয়নি অতিমারিতে পর্যদুস্ত আবাসন, বিদ্যুৎ শিল্পের সমস্যার কথা।
সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে মামলার ভারপ্রাপ্ত বিচারপতিদের বেঞ্চ কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই কেন্দ্র ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে কে ভি কামাথ কমিটির রিপোর্ট তলব করেছে আজ। যে রিপোর্টে করোনার হানায় বিপর্যস্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রের সুরাহা হিসেবে এককালীন ঋণ পুনর্গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। মোরাটোরিয়াম নিয়ে এখনও পর্যন্ত জারি হওয়া সব বিবৃতি ও বিজ্ঞপ্তিও তলব করা হয়েছে।
১৩ অক্টোবর পরবর্তী শুনানি। বিচারপতিদের মন্তব্য, ব্যাঙ্ক ও ঋণগ্রহীতা, দু’পক্ষের প্রয়োজনের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে রায় দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য। তাই সমস্ত দিক বিবেচনা করে দেখতে চায় আদালত। কেন্দ্রকেও সে দিন বক্তব্য জানাতে হবে।
উল্লেখ্য, কামাথ কমিটি তাদের রিপোর্টে ২৬টি শিল্পকে ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ করেছে। অন্য দিকে, মোরাটোরিয়ামে সুদ মকুবের মামলায় সম্প্রতি কেন্দ্র জানিয়েছে, তারা আট ধরনের ঋণে সুদের উপর সুদে ছাড় দিতে রাজি। তা-ও আবার শুধু ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণেই। এই ক্ষেত্রগুলি হল, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সংস্থার ঋণ, গৃহঋণ, শিক্ষাঋণ, গাড়িঋণ, ভোগ্যপণ্য ও অন্যান্য সামগ্রী কেনার ঋণ ছাড়াও ব্যক্তিগত ঋণ এবং ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া। কেন্দ্র জানিয়েছে, ওই সব ক্ষেত্রে সুদ ছাড়ের জন্য টাকার দায় ব্যাঙ্কগুলিকে নিতে হবে না। কেন্দ্রই তা মেটাবে।
এ দিন আবাসন সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাইয়ের তরফে আইনজীবী সি এ সুন্দরম বলেন, করোনায় সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত যারা, তাদের অন্যতম আবাসন শিল্প। অথচ কেন্দ্রের চক্রবৃদ্ধি হারে (সুদের উপর সুদ) সুদ মকুবের প্রস্তাবে তারাই বাদ। কেন্দ্রের হলনামায় সুদ ছাড়ে খরচ সংক্রান্ত কিছু তথ্য খতিয়ে দেখা জরুরি বলে দাবি করেন অন্য আইনজীবী কপিল সিব্বলও।