ছবি সংগৃহীত
জিএসটি চালুর পর থেকেই তার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসঙ্গতির অভিযোগ তুলছেন ব্যবসায়ীদের বড় অংশ। বিশেষত রিফান্ড বা আগে মেটানো করের টাকা ফেরত পাওয়ার প্রশ্নে। সোমবার এক মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টও জিএসটি আইন এবং ব্যবসায়ীদের করের টাকা ফেরতের (রিফান্ড) হিসাবে অসঙ্গতিগুলি খতিয়ে দেখতে বলল জিএসটি পরিষদকে।
এ দিন জিএসটি সংক্রান্ত এক মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, কাঁচামাল কেনার সময় মেটানো করই শুধু ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট হিসেবে ফেরত পাবেন ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্ট পরিষেবা বাবদ কর মিটিয়ে থাকলে, সেই টাকা মিলবে না। যন্ত্রপাতি কেনার জন্য মেটানো করের টাকাও ফেরত পাওয়া যাবে না। শীর্ষ আদালত বলেছে, জিএসটির ‘ইনভার্টেড ডিউটি স্ট্রাকচারে’ (যেখানে কাঁচামালের উপর মেটানো করের হার তৈরি পণ্যের করের থেকে বেশি হয়) কাঁচামালের উপর যে কর ব্যবসায়ী মিটিয়েছেন, সেই টাকা-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে রিফান্ড পাওয়ার বর্তমান ব্যবস্থা আইনসম্মত। জিএসটি-তে কর ফেরত-সহ আরও কিছু বিষয় নিয়ে একাধিক মামলা চলছিল শীর্ষ আদালতে। তার রায় ঘোষণা করতে গিয়েই অসঙ্গতির কথা তোলে আদালত।
জিএসটি রিফান্ড নিয়ে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। কর বিশেষজ্ঞ এবং বণিকসভা মার্চেন্ট চেম্বারের ব্যাঙ্কিং অ্যান্ড ফিনান্স কমিটির কো-চেয়ারম্যান স্মরজিৎ মিত্র বলেন, ‘‘জিএসটি চালুর পরে বছর চারেক কাটলেও আইনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে অসামঞ্জস্য রয়েছে, তা সংশোধন করা হয়নি। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একই পণ্য লেনদেনের ব্যাপারে রফতানির ক্ষেত্রে এক নিয়ম, দেশে বিক্রি করলে অন্য।’’ উদাহরণ হিসেবে স্মরজিৎ বলেন, ‘‘ইনভার্টেড ডিউটি স্ট্রাকচারে কাঁচামাল কেনার সময় দেওয়া কর তৈরি পণ্যের করের থেকে কেটে নেওয়া যায় না। কারণ, সেটা কম। অথচ যে কর কেটে নেওয়া যাচ্ছে না, তা ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট বাবদ রিফান্ড পেতে লম্বা সময় লাগছে। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে পরিষেবা বাবদ মেটানো করের টাকাও ফেরত মিলছে না। ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’’
কনফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশীল পোদ্দার বলেন, ‘‘বহু দিন ধরে জিএসটি আইনের ত্রুটিগুলি নিয়ে অভিযোগ জানাচ্ছি। সব অসঙ্গতি
খতিয়ে দেখা জরুরি। সুপ্রিম কোর্ট বলায় আশা করি এ বার সেটা হবে।’’