সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
যে সমস্ত কর্মীরা আগে প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) কর্মী পেনশন প্রকল্প বা ইপিএস-এ (এমপ্লয়িজ় পেনশন স্কিম) যোগ দেননি, তাঁদের সেখানে নাম লেখানোর জন্য আরও ছ’মাস সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে যাঁদের মূল বেতন ১৫,০০০ টাকার বেশি, তাঁদের এই প্রকল্পে বাড়তি টাকা জমা করার শর্ত শুক্রবার খারিজ করে দিয়েছে তারা।
কর্মী ভবিষ্যনিধি আইনে বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরা প্রভিডেন্ট ফান্ডে তাঁদের মূল বেতনের ১২% টাকা জমা করেন প্রতি মাসে। সংস্থার তরফেও কর্মীদের পিএফ তহবিলে সমান অংশ, অর্থাৎ বেতনের ১২ শতাংশই জমা দেওয়া হয়। এই আইনেই গত ১৯৯৫ সালে কর্মী পেনশন প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। যাঁদের মূল বেতন ৬৫০০ টাকা বা তার কম, তাঁদের বেতনের যে ১২% অর্থ পিএফে জমা পড়ছিল, তার মধ্যে ৮.৩৩% নিয়ে পেনশন তহবিল তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কর্মী এবং তাঁর সংস্থাকে বাড়তি অনুদান হিসেবে মূল বেতনের ৮.৩৩% জমা করার সুযোগও দেওয়া হয়েছিল। ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর ইপিএসে-র এই নিয়মেই সংশোধন আনা হয়। তাতে পেনশন প্রকল্পে যোগ দেওয়ার জন্য মূল বেতনের ঊর্ধ্বসীমা ৬৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয় ১৫,০০০ টাকা। যাঁদের ১৫ হাজারের বেশি মূল বেতন, তাঁদেরও প্রকল্পে থাকার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে শর্ত রাখা হয়, ১৫,০০০ টাকার অতিরিক্ত বেতনের ১.১৬% অর্থ পেনশন তহবিলে দিতে হবে। আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এই শর্ত সংবিধান বিরোধী।
কেরল, রাজস্থান ও দিল্লির হাই কোর্ট ২০১৪-র পেনশন প্রকল্পে যাবতীয় সংশোধনকেই খারিজ করে দিয়েছিল। এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংস্থা (ইপিএফও) এবং কেন্দ্রীয় সরকার। ইপিএফও-র বক্তব্য ছিল, কেরল হাই কোর্টের রায় মানতে হলে বেসরকারি ক্ষেত্রের সমস্ত কর্মচারীকেই পেনশন দিতে হবে, সে তাঁদের মূল বেতন যতই হোক না কেন। সমস্ত বেসরকারি কর্মী তখন কর্মী পেনশন প্রকল্পে নাম লেখাবেন। পেনশন তহবিলে কোনও অর্থ না দিলেও, মূল বেতনের অর্ধেক অর্থ পেনশন হিসেবে দাবি করবেন। আজ প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ ২০১৪ সালের সংশোধিত ওই পেনশন প্রকল্পই বহাল রাখল। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, যে সব যোগ্য কর্মী প্রকল্পে যোগ দিতে পারেননি, তাঁদের ফের সুযোগ দিতে হবে।