চায়ের উৎপাদন ও গুণগত মান বাড়ানোর জন্য বাগানগুলিকে বিভিন্ন খাতে টি বোর্ড মারফত ভর্তুকি দেয় কেন্দ্র। যার বেশিরভাগই যায় অসম-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বোর্ডের প্রস্তাব মতো বরাদ্দ না-মেলায় উন্নয়ন প্রকল্প ধাক্কা খাচ্ছে বলে অভিযোগ জানাচ্ছিল চা শিল্প মহল। বোর্ড সূত্রের খবর, ২০১৯-২০ সালের সংশোধিত বাজেটে এর জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে কেন্দ্র। তাতে ভর্তুকি খাতে অতিরিক্ত ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণ ভারত ও হিমাচলপ্রদেশের জন্য। বস্তুত, চলতি ও আগামী অর্থবর্ষের জন্য এই অঞ্চলগুলিতে সেই বরাদ্দ একলাফে অনেকটাই বাড়ছে।
সিটিসি ও অর্থোডক্স, উভয় চায়ের জন্যই ভর্তুকি দেয় বোর্ড। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সেই ভর্তুকিতে কেন্দ্র কিছুটা রাশ টেনেছিল। বরাদ্দ কমায় বিভিন্ন সময়েই বোর্ডের কর্তারা শিল্প মহলকে ভর্তুকির উপরে নির্ভরশীলতা কমাতে বলতেন। সূত্রের খবর, ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ সালে অসম-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভর্তুকির অঙ্ক প্রায় এক থাকলেও উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণ ভারত ও হিমাচলপ্রদেশের ক্ষেত্রে তা কমেছিল। গত বছরের বাজেটে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের জন্য বরাদ্দের প্রস্তাব ছিল ১৬.৫৯ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার বোর্ডের ডেপুটি চেয়ারম্যান অরুণকুমার রায় জানান, সংশোধিত বাজেটে বোর্ডের জন্য মোট বরাদ্দ ১৫০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৯৭.৬৪ কোটি। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণ ভারত ও হিমাচলপ্রদেশের জন্য ভর্তুকি খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ২১.১৪ কোটি। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে তা বণ্টন করা হবে। ২০২০-২১ সালেও ওই সব অঞ্চলের জন্য ভর্তুকির বরাদ্দ বাড়িয়ে ৬৯ কোটি টাকা করা হয়েছে।
চা বাগানে ভর্তুকি
• চা শিল্পের উন্নয়নে বাগানগুলিকে ভর্তুকি দেয় টি বোর্ড
• বাণিজ্য মন্ত্রক সেই খাতে অর্থ বরাদ্দ করে
• বরাদ্দে রাশ পড়ায় গত কয়েক বছরে অনেক বাগানের ভর্তুকি বকেয়া
• উত্তরবঙ্গ, হিমাচলপ্রদেশ ও দক্ষিণ ভারতের বাগানগুলির জন্য সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে ২১ কোটি টাকা
কোন ক্ষেত্রে
• অর্থোডক্স চা তৈরি
• সেচের উন্নয়ন
• চায়ের গুণগত মানোন্নয়নের ব্যবস্থা গড়তে
• পুরনো চা গাছ তুলে নতুন গাছ বসাতে
• গাছের উপর ‘শেড’ গড়তে
ভর্তুকি বৃদ্ধির খবরে খুশি ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের (আইটিএ) সেক্রেটারি জেনারেল অরিজিৎ রাহা এবং দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের (ডিটিএ) সেক্রেটারি জেনারেল কৌশিক বসু। কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘পাহাড়ে গোলমালের জেরে দার্জিলিং চায়ের উৎপাদন ধাক্কা খাওয়ার পরে ভর্তুকির আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি। এখনও পর্যন্ত ২০ কোটি টাকা বকেয়া। মরসুম শুরুতে তা মিললে কিছুটা স্বস্তি মিলবে।’’