Stock Market Crash

বাজার থেকে গায়েব ১১ লক্ষ কোটি টাকা! পুজোর মুখে কেন রক্তাক্ত শেয়ার বাজার?

পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতি। অপরিশোধিত তেলের দর বৃদ্ধি। এই দু’য়ের প্রভাবে পুজোর মুখে রক্তাক্ত হল শেয়ার বাজার। লক্ষ্মীবারে প্রায় দু’হাজার পয়েন্ট পড়েছে সেনসেক্স।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৫৭
Share:

—প্রতীকী ছবি।

দুর্গাপুজোর বোধনের আগে রক্তাক্ত শেয়ার বাজার। ভয়ঙ্করভাবে পড়ল সেনসেক্স ও নিফটির গ্রাফ। ফলে লক্ষ্মীবারে লগ্নিকারীদের মাথায় হাত। এ দিন শেয়ার সূচকের পতনের জেরে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাজার থেকে উড়ে যায় প্রায় ১১ লক্ষ কোটি টাকা! লোকসান সামলে কত দিনের মধ্যে সেনসেক্স ও নিফটি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে, তা নিয়ে সন্দিহান আর্থিক বিশ্লেষকেরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর বাজার বন্ধ হওয়ার পর দেখা যায় বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের (বিএসই) শেয়ারের গ্রাফ পড়েছে ১,৭৬৯.১৯ পয়েন্ট। অর্থাৎ নামতে নামতে ৮২,৪৯৭.১০ পয়েন্টে গিয়ে থেমেছে সেনসেক্স। এর লেখচিত্রে ২.১০ শতাংশ পতন দেখা গিয়েছে।

অন্য দিকে, ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে (এনএসই) ৫৪৬.৮০ পয়েন্ট পতন লক্ষ করা গিয়েছে। বাজার বন্ধ হওয়ার সময়ে এর শেয়ার সূচক নিফটি-৫০ দাঁড়িয়ে যায় ২৫,২৫০.১০ পয়েন্টে। অর্থাৎ এর লেখচিত্রে পতনের পরিমাণ ২.১২ শতাংশ।

Advertisement

এ দিন শেয়ার বাজার ক্ষত-বিক্ষত হওয়ায় বিএসইতে তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলির বাজারি মূলধন কমেছে প্রায় ১১ লক্ষ কোটি টাকা। ফলে তা ৪৬৫ লক্ষ কোটি টাকায় নেমে আসে। সেনসেক্সে থাকা সংস্থাগুলির মধ্যে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, লার্সেন অ্যান্ড টুর্বো (এলএনটি) এবং ভারতী এয়ারটেলের শেয়ারের দর সবচেয়ে বেশি কমেছে।

অন্য দিকে, বিএসইতে একমাত্র ভাল ফল করেছে জেএসডব্লু স্টিল ও টাটা স্টিল। লক্ষ্মীবারে ঘরোয়া তেল সংস্থাগুলির স্টকেও দেখা গিয়েছে মহাপতন। ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম ও হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামের শেয়ারের দাম ৬ শতাংশ কমেছে। এর মধ্যেই ভারতের ভিআইএক্সে বেড়েছে প্রায় ৯ শতাংশ। যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

লক্ষ্মীবারে শেয়ার বাজারের এহেন পতনের নেপথ্যে একাধিক কারণের কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞেরা। যার প্রথমেই রয়েছে ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাত। গত মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ইহুদি ভূমিতে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় তেহেরান। অন্য দিকে ইরান সমর্থিক জঙ্গি গোষ্ঠী হিজ়বুল্লাকে নিকেশ করতে লেবাননে গ্রাউন্ড অপারেশন শুরু করেছে ইজ়রায়েল। এই যুদ্ধের সরাসরি প্রভাবে ভারতের শেয়ার বাজারে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

দ্বিতীয়ত, পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় বাড়ছে অপরিশোধিত তেলের দাম। ইতিমধ্যেই ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দর ব্যারেল প্রতি ৭৫ ডলার ছাপিয়ে গিয়েছে। গত তিন দিনে খনিজ তেলের দাম ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, প্রত্যাঘাতের সময়ে ইজ়রায়েলি বায়ুসেনা ইরানের তেলের ভান্ডারকে নিশানা করলে অপরিশোধিত তেলের দর আকাশ ছোঁবে। সে ক্ষেত্রে ভারতের মতো তেল আমদানিকারী দেশের অর্থনীতি প্রবল ভাবে ধাক্কা খেতে পারে। লগ্নিকারীরা তাই পরিস্থিতির উপর নজর রেখে বাজার থেকে টাকা সরিয়ে নিচ্ছেন।

এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু নিয়মে কড়া নিষেধাজ্ঞা এনেছে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা সেবি। যা বিনিয়োগকারীদের হতাশ করেছে। পাশাপাশি, চিনা শেয়ার বাজারে নতুন করে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। ফলে বিদেশি লগ্নিকারীদের একাংশ এদেশের বাজার থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement