প্রতীকী ছবি।
কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় গাড়ির জ্বালানি হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি) ভরার জন্য বেশ কিছু পাম্প ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে। ওই গ্যাস বণ্টন ব্যবস্থায় যুক্ত সংস্থাগুলি সূত্রের খবর, আগামী মার্চের মধ্যে এই সব অঞ্চলে পাম্পের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে হবে ৬০টি। গাড়ি ডিলার এবং সংস্থাগুলির আশা, পাম্পের সংখ্যা বাড়লে গাড়ির বিক্রিও বাড়বে। তবে এই জ্বালানিচালিত গাড়ির চাহিদা বাড়াতে হলে পাম্প খোলার পরিকল্পনা আরও সুসংহত হওয়া জরুরি বলে মত ডিলারদের।
রাজ্যে শিল্পোৎপাদন, গাড়ির জ্বালানি এবং বাড়ি-হোটেল-রেস্তরাঁয় রান্নার কাজে ব্যবহারের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাসের জোগানের জন্য গেলের সঙ্গে চর্চা শুরু হয় ২০০৫ সালে। জগদীশপুর (উত্তরপ্রদেশ)-হলদিয়া পর্যন্ত গেলের পাইপলাইন আপাতত এসেছে দুর্গাপুর পর্যন্ত। ধামড়া থেকেও হলদিয়া ও উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে বারাউনি-গুয়াহাটি পাইপলাইন গড়ছে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সংস্থাটি। সেই প্রাকৃতিক গ্যাস বিভিন্ন জেলায় বণ্টনের বরাত পেয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েল আদানি গ্যাস (আইওএজিপিএল), হিন্দুস্তান পেট্রলিয়াম (এইচপিসিএল) এবং বেঙ্গল গ্যাস (বিজিসিএল)। আপাতত বর্ধমানে এসার গোষ্ঠীর থেকে গ্যাস কিনে বণ্টন সংস্থাগুলিকে দিচ্ছে গেল। তারা সিএনজি পাম্পে তা বিক্রি করছে।
কলকাতা, রাজারহাটে এমন চারটি পাম্প চালু করেছে বিজিসিএল। সংস্থা সূত্রের খবর, গোড়ায় মাসে ১০০ কেজি গ্যাস বিক্রি হলেও, এখন তা বেড়ে ৭০০ কেজিতে পৌঁছেছে। সংস্থার যদিও দাবি, পাইপলাইন ছাড়াই এখন ৮০০০-১০,০০০ কেজি দিতে প্রস্তুত তারা। পাশাপাশি, মার্চের মধ্যে কসবা, আলিপুর, বেলগাছিয়া, ঠাকুরপুকুর, কল্যাণী, ব্যান্ডেল ও শ্রীরামপুরেও চালু হবে তাদের সিএনজি পাম্প।
এ দিকে আইওএজিপিল-এর রাজ্যের প্রকল্পের প্রধান শুভজিৎ চক্রবর্তী জানান, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে তাঁদের ১৭টি পাম্প তৈরি। চালু ১৩টি। বর্ধমান তো বটেই বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, বীরভূম থেকেও কয়েক হাজার গাড়ি, বড় ট্রেলার, অটো সেখানে সিএনজি ভরছে। যাদের মধ্যে ৬০টির মতো সরকারি বাসও রয়েছে। মার্চের মধ্যে মোট ২২-২৩টি পাম্প চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এইচপিসিএল-এর জিএম সঞ্জয় ঘোষের বক্তব্য, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনায় তাঁদের ন’টি পাম্প চালু। হবে আরও ১৮টি। তবে উত্তরবঙ্গে পাম্প চালু হতে হতে ২০২২-২৩ সাল হয়ে যাবে।
তেলের চড়া দামের কারণে এ রাজ্যেও সিএনজি গাড়ি নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে বলে জানাচ্ছেন ডিলারদের সংগঠন ফাডা-র এ রাজ্যের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ ভাণ্ডারি। তাঁর বক্তব্য, কিন্তু ক্রেতারা জানতে চান, পাম্প কোথায় রয়েছে? তাই বিক্ষিপ্ত ভাবে নয়, আরও সুসংহত ভাবে ও সকলের মধ্যে সমন্বয় রেখে পাম্প খোলা প্রয়োজন। যেমন বাস বা ট্রাক চলাচল করে যে রাস্তায়, সেই রাস্তায় পাম্প বেশি খোলা প্রয়োজন। কারণ সেখানে বিক্রি বেশি হবে। সেই চাহিদা বাড়লে বণ্টন সংস্থাগুলিও লাভজনক ভাবে ব্যবসা করতে পারবে। আবার গ্যাসের জোগান বাড়লে যাত্রী গাড়ির চাহিদাও তখন বাড়বে। বস্তুত, কসবা, দুর্গাপুর, ও আরামবাগে তিনটি সরকারি বাস ডিপোতেও সিএনজি পাম্প খুলছে ওই তিন সংস্থা।