প্রতীকী ছবি।
সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছিল আগে থেকেই। এ বার তাকে সত্যি প্রমাণ করে সুদের হার বাড়ানো শুরু করল স্টেট ব্যাঙ্ক। ঋণের তহবিল সংগ্রহের খরচের ভিত্তিতে হিসাব কষা সুদের হার (এমসিএলআর) বিভিন্ন মেয়াদে ১০ বেসিস পয়েন্ট করে বাড়িয়েছে দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কটি (সারণিতে)। এর ফলে শিল্প ও বাণিজ্যিক সংস্থার ঋণের পাশাপাশি বাড়ছে বাড়ি, গাড়ি, শিক্ষা, ব্যক্তিগত-সহ বিভিন্ন খুচরো ঋণের মাসিক কিস্তিও। গত ১৫ এপ্রিল থেকেই সুদের নতুন হার কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যাঙ্কটি। প্রায় তিন বছর চার মাস পরে এমসিএলআর বাড়াল স্টেট ব্যাঙ্ক। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, তাদের সুদ বৃদ্ধির প্রভাব পড়তে পারে অন্যান্য ব্যাঙ্কের সুদ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে।
গত কয়েক মাস ধরে টানা বেড়ে চলেছে মূল্যবৃদ্ধির হার। একে নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগামী দিনে যে সুদ বাড়ানো হতে পারে, সেই ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই দিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে তার আগেই স্টেট ব্যাঙ্ক সুদ বাড়াল। সাধারণত কোনও ঋণের ক্ষেত্রেই এমসিএলআরের নীচে সুদ নেওয়া হয় না। তবে ঝুঁকির বিচার করে এর চেয়ে বেশি হার নেওয়া হতে পারে। ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, স্টেট ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্তে মূল্যবৃদ্ধির চাপে থাকা সাধারণ মানুষের বাড়ি-গাড়ি কেনার খরচ বাড়বে। তাতে ধাক্কা খেতে পারে করোনার প্রভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করা আবাসন ও গাড়ি শিল্প। অন্যান্য শিল্পেরও ঋণের খরচ বাড়বে। যার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে অর্থনীতির উপরে।
তবে শুধু ঋণ নয়, এ বার আমানতেও সুদ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞেরা। কারণ, মূল্যবৃদ্ধির হার বাদ দিয়ে হিসাব কষলে দেখা যাচ্ছে, ব্যাঙ্কে জমার উপরে আমানতকারীদের প্রকৃত আয় নেমেছে শূন্যের নীচে। ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেন বলেন, ‘‘মূল্যবৃদ্ধির হার যে মাত্রায় বেড়েছে, তাতে আমানতেও সুদের হার বৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী।’’ ঠিক সে কারণেই আগে ঋণের সুদ বাড়ানো হল বলে মত বিশেষজ্ঞদের। ভাস্করবাবুর বক্তব্য, ‘‘স্টেট ব্যাঙ্ক দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক। তারা সুদের হার বাড়ানোর পরে বাকিরাও বাড়াবে বলে আমার ধারণা।’’