ছবি: সংগৃহীত
সংস্থার ক্ষতি কমাতে পারলে বিদ্যুৎকর্মীদের উৎসাহ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তটি আরও বিবেচনার প্রয়োজন আছে বলে ‘ফাইলবন্দি’ হয়ে গিয়েছিল প্রস্তাবটি। যা নিয়ে চাপা ক্ষোভ ছড়ায় বিদ্যুৎকর্মী থেকে শুরু করে ইঞ্জিনিয়ার, আধিকারিকদের মধ্যে। সূত্রের খবর, পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার পরে আপাতত ফাইলটির লালফিতের ফাঁস ‘আলগা’ করা হয়েছে। ইংরেজি নববর্ষে এক বছরের জন্য প্রাপ্য উৎসাহ ভাতা কর্মী-আধিকারিকদের দিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। তবে এখন থেকে প্রতি বছর ওই ভাতা দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে ফের সিদ্ধান্ত হবে।
সূত্রের খবর, ঠিক হয়েছে বিদ্যুৎ ভবনের কর্মী-আধিকারিকদের গ্রেড-পের দ্বিগুণ ও রাজ্যের অন্যত্র কর্মীদের সর্বাধিক পাঁচ গুণ হারে ভাতা দেওয়া হবে। বিবেচনায় থাকবে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে কত ক্ষতি (বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে গিয়ে সংবহনজনিত ও বাণিজ্যিক ক্ষতি) কমেছে, সেই হিসেবটিও। জানুয়ারিতেই ওই ভাতা দেওয়া হবে। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের জন্য কর্মীদের ওই উৎসাহ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত এক বছরের কিছু বেশি সময়ে কর্মীদের দক্ষতায় ক্ষতি বাঁচিয়ে সংস্থার ঘরে বাড়তি আদায় হয়েছে প্রায় ১৭০ কোটি টাকা। সে কারণেই এক বছরের প্রাপ্য হিসেবে আপাতত উৎসাহ ভাতা দেওয়া হবে। এর পরে কী হবে, তা পর্ষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের অন্যান্য বণ্টন সংস্থার মতো রাজ্যের সরকারি সংস্থাটিরও বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে গিয়ে ক্ষতির বহর মাত্রা ছাড়িয়েছে। গড়ে যা (সিইএসসি এলাকা বাদে) ২৮-৩০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম-সহ উত্তরবঙ্গের কিছু জেলায় তার হার
প্রায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। ওই সব জেলার কোনও কোনও অঞ্চলে চুরি, বিল না-দেওয়া ইত্যাদি কারণে ১০০ টাকার বিদ্যুৎ বিক্রি করলে, ৩০-৪০ টাকা আসে বণ্টন সংস্থার ঘরে। বাকিটা ক্ষতির খাতায় যায়। এ দিকে গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের জেরে রাজ্যে বণ্টন সংস্থার গ্রাহক সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে।
এই অবস্থায় সংস্থা কর্তৃপক্ষ জানান, ক্ষতি কমাতে হবে। কর্মীদের দক্ষতায় ক্ষতির খাতায় সেই অর্থ আদায় হলে মিলবে উৎসাহ ভাতা। প্রথম ধাপে ৭% হারে ক্ষতি কমানোর কথাও বলা হয় নির্দেশিকায়। সেই খাতেই আপাতত কর্মীদের দক্ষতার নিরিখে এক বছরের ভাতা দিতে চলেছে বণ্টন সংস্থা।