এসভিবি দেউলিয়া হয়ে বন্ধ হতেই চিন্তায় পড়েছেন ভারতের অর্থনীতিবিদ এবং বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। ছবি: রয়টার্স।
আমেরিকার সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক (এসভিবি) দেউলিয়া হয়ে বন্ধ হতেই চিন্তায় পড়েছেন ভারতের অর্থনীতিবিদ এবং বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। কারণ, এ দেশের বহু নতুন সংস্থা (স্টার্ট আপ) এবং তাতে লগ্নিকারী ভেঞ্চার ক্যাপিটাল তহবিলের ঋণদাতা তারা। একাংশের আমানতও জমা সেখানে। ফলে ব্যাঙ্কটির গুটিয়ে যাওয়া ভারতীয় অর্থনীতিকে কতটা বিপাকে ফেলবে, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন, এটা অশনি সঙ্কেত। লাগাতার সুদ বৃদ্ধি ব্যাঙ্কগুলিকে কোথায় এনে দাঁড় করাতে পারে, এসভিবি তার প্রমাণ। ভারতের অর্থনীতি গা বাঁচাতে পারবে না বলেও সতর্ক করছেন তাঁরা। আশঙ্কা, ধাক্কা খেতে পারে শেয়ার বাজার। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের অবশ্য দাবি, কিছু স্টার্ট আপের সমস্যা হলেও দেশের অর্থনীতিতে তেমন বড় প্রভাব পড়বে না। এই ঘটনায় বাজারের আস্থা নড়ে যাবে কিংবা অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলেও মনে হয় না। তবে শেয়ার বাজারে এর ধাক্কা লাগতে পারে, আশঙ্কা তাদেরও।
অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার বলেন, এসভিবি-র পতন অন্য ব্যাঙ্কের কাছে অশনি সঙ্কেত। সুদের হার যে ভাবে চড়ছে তাতে ভবিষ্যতে অন্য ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে না, সেটা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। অনেকেই ঋণ শোধ করতে পারছে না। শুধু ব্যাঙ্ক বা নতুন সংস্থা নয়, বিভিন্ন শিল্পই ভুগতে পারে সংস্থাগুলির মূলধন জোগাড়ের পথ আটকালে।
অনেকে এসভিবি-র পতনে ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী মন্দার ছায়া দেখছে। তবে কেন্দ্রীয় সূত্রের দাবি, তার সঙ্গে এটির তুলনা চলে না। বছর পনেরো আগের ওই সঙ্কট আরও বৃহত্তর পরিসরে ঘটেছিল। তবে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে এ বার নজর দিতে হবে লাগাতার সুদ বৃদ্ধির ফলে হওয়া ক্ষয়-ক্ষতিতে।
আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের মতে, ভারতীয় অর্থনীতি ভুগবে, কারণ এসভিবি-র ঋণ রয়েছে এখানকার বেশ কিছু স্টার্ট আপে। তাঁর কথায়, ‘‘ওই ব্যাঙ্কের থেকে ঋণ নিয়ে অনেক ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড নতুন সংস্থায় লগ্নি করেছে। এ বার ওই মূলধনের সূত্র অনেকটাই শুকিয়ে যাবে। যা পুঁজির জোগানে সমস্যা তৈরি করবে। দেশের কিছু বড় মাপের নতুন উদ্যোগে আবার এসভিপি সরাসরি ঋণ দিত। সমস্যায় পড়বে তারাও।’’ পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের বক্তব্য, মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে আনতে ভারত, আমেরিকা-সহ সর্বত্র সুদ আরও বাড়তে পারে। ধার মেটানোর বোঝা বাড়বে, এটা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করুক নতুন সংস্থাগুলি।