ঠারেঠোরে বলছিলেন গাড়ি শিল্পের অনেকেই। অদূর ভবিষ্যতে দুই ও তিন চাকার ক্ষেত্রে শুধুই বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির যে প্রস্তাব নীতি আয়োগ এবং কেন্দ্রের আন্তঃমন্ত্রিগোষ্ঠী দিয়েছে, তার বাস্তবতা নিয়ে এ বার সরাসরি প্রশ্ন তুলল গাড়ি নির্মাতাদের সংগঠন সিয়াম। তারা স্পষ্ট বলেছে, এই ভাবনা খুবই ভাল। কিন্তু তা মোটেও বাস্তবসম্মত নয়। এমন সময়সীমা চাপিয়ে দেওয়া হলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে পুরো গাড়ি শিল্পই। জোরদার ধাক্কা খাবে যন্ত্রাংশ নির্মাতা ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলিও। তার প্রভাব পড়তে পারে কর্মসংস্থানে।
২০২৩ সাল থেকে তিন চাকার ক্ষেত্রে শুধুই বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে নীতি আয়োগ ও কেন্দ্রের আন্তঃমন্ত্রিগোষ্ঠী। দু’চাকার (১৫০ সিসির কম ইঞ্জিনের) ক্ষেত্রে তা ২০২৫ সাল। রবিবার বিবৃতিতে সিয়ামের প্রেসিডেন্ট রাজন ওয়াধেরা বলেছেন, আসন্ন নতুন দূষণ বিধি (বিএস-৬) অনুযায়ী গাড়ি তৈরি করতে বিপুল লগ্নি করেছে সংস্থাগুলি। সেই বিনিয়োগের টাকা ব্যবসা থেকে তুলতে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে তাদের। তার আগেই কী ভাবে সেই গাড়িগুলি (তিন ও কিছু দু’চাকার) তৈরি বন্ধ করে আবার নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি শুরুর প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে! তাঁর বক্তব্য, এত দ্রুত এই পরিবর্তন আদৌ সম্ভব কি না, সে সম্পর্কে শিল্প মহল, যন্ত্রাংশ নির্মাতা ও কেন্দ্রীয় সরকার, কোনও পক্ষেরই ধারণা নেই।
সিয়ামের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, তাঁরা সব সময়েই জাতীয় স্বার্থের পক্ষে। তাই ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প ও পরিকল্পনা চালুর অনেক আগেই সেই পথে হেঁটেছেন তাঁরা। দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অবদানের পাশাপাশি ৩.৭ কোটি কর্মসংস্থানেরও সূত্র এই শিল্প।
গাড়ি শিল্প আগেই জানিয়েছে যে, বৈদ্যুতিক গাড়ি চালু করার ব্যাপারে তাদের নীতিগত কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু তা চালু করার আগে তাদের যথেষ্ট সময় দিতে হবে। ওয়াধেরা এ দিন বলেন, উৎপাদনমুখী শিল্পের এই সাফল্য যাতে তাড়াহুড়ো করে বৈদ্যুতিক গাড়ি চালু করতে গিয়ে ব্যাহত না হয় তা দেখতে হবে। সংশ্লিষ্ট সব মহলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবসম্মত সময়সীমা তৈরি করে একটি পরিকল্পনা তৈরির পক্ষে মত দিয়েছেন সিয়ামের প্রেসিডেন্ট।