ইস্পাতে তারা ছিলই। এ বার অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েল তৈরিতেও নামছে শ্যাম মেটালিক্স। সোমবার সংস্থার দাবি, এ রাজ্যে হাওড়ার পাকুড়িয়াতে দেশের বৃহত্তম অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল কারখানা চালু করছে তারা। লগ্নি প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। উৎপাদন শুরু হবে পরের মাস থেকেই। কাজ পাবেন প্রায় ৫০০ জন।
রাজ্যে নতুন ইস্পাত কারখানা গড়তেও পুঁজি ঢালার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থার। সে ক্ষেত্রে লগ্নি হবে আরও ১২৬০ কোটি। সংস্থার যুগ্ম ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্জয় আগরওয়াল জানান, সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ১৬৬০ কোটি টাকা বিনিয়োগের
লক্ষ্য রয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম মিলিয়ে প্রায় ২০০০ কর্মসংস্থান হবে।
সঞ্জয়ের দাবি, দেশে এত বড় ফয়েল কারখানা আর কোথাও নেই। ভারতকে যেখানে বছরে ৮০,০০০ টন অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল আমদানি করতে হয়, সেখানে হাওড়ার কারখানায় তাঁরাই উৎপাদন করবেন বছরে ৩৯,০০০ টন। ফলে ওই খাতে আমদানি খরচও অনেকখানি কমবে।
অন্য দিকে, ১২৬০ কোটি টাকা সংস্থা লগ্নি করবে তাদের ইস্পাত উৎপাদন বাড়াতে। রাজ্যে রানিগঞ্জের কাছে জামুরিয়া এবং মঙ্গলপুরে শ্যাম মেটালিক্সের দু’টি ইস্পাত কারখানা রয়েছে। ওড়িশার সম্বলপুরে আছে আরও একটি। তৈরি হয় নির্মাণ শিল্পে ব্যবহৃত টিএমটি বার, বিম ইত্যাদি। সংস্থার দাবি, এর মধ্যে জামুরিয়াতে পুরনোটির পাশেই নতুন কারখানা গড়া হবে। সেখানে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। ১৩০০ কোটি টাকা লগ্নি হবে ওড়িশার কারখানাটির উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে। সঞ্জয়ের বার্তা, ‘‘ইস্পাতের উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা রূপায়িত হবে ২০২৫ সালের মধ্যে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশায় মোট ২৫০০ কোটি টাকা লগ্নি করব।’’ বর্তমানে শ্যাম মেটালিক্সের তিনটি ইস্পাত কারখানার মোট উৎপাদন ক্ষমতা বছরে ৫০.৭১ লক্ষ টন। তা আগামী চার বছরে বাড়িয়ে ১ কোটি ১০ লক্ষ ৬০ হাজার টনে নিতে চায় সংস্থা।
সম্প্রতি শ্যাম মেটালিক্স বাজারে শেয়ার ছেড়ে ৯০৯ কোটি টাকা তুলেছে। এর মধ্যে সংস্থার প্রোমোটারেরা তাঁদের যে শেয়ার বিক্রি করছেন, সেই বাবদ পাবেন ২৫২ কোটি টাকা। বাকি ৬৫৭ কোটি খরচ হবে ব্যবসা সম্প্রসারণে। কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়িত করতে বাকি টাকার সংস্থান হবে সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকেই। এর জন্য কোনও ঋণ নেবেন না তাঁরা।