অধিকাংশ শেয়ারে পতন। বম্বে স্টক এক্সচেঞ্চের বাইরে। ছবি: পিটিআই
করোনাভাইরাসের ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর মুখে সোমবার শেয়ার বাজারে বড়সড় পতন। মুম্বই শেয়ার সূচক সেনসেক্স নামল ৮১২ পয়েন্ট। ২৫৪ পয়েন্ট পতন হয়েছে নিফটিতে। দুই সূচকেই ২ শতাংশেরও বেশি পতনের জেরে শেয়ার বাজার থেকে মুছে গেল লগ্নিকারীদের সাড়ে চার লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। ভারতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ক্রমাগত বেড়ে যাওয়া, কৃষি বিলের বিরুদ্ধে সংসদ ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ এবং এইচএসবিসি ব্যাঙ্ক নিয়ে আশঙ্কার যোগফলেই বাজার এমন মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্ব বাজারে করোনার দাপট, ব্রিটেনে নতুন করে লকডাউনের সম্ভাবনা, এইচএসবিসি ব্যাঙ্ক নিয়ে একাধিক জল্পনার জেরে সোমবার বাজার কিছুটা নিম্নগামী হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন অনেকেই। তবে এত বড় পতন অনেকটাই অনাকাঙ্খিত বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার বাজার বন্ধের সময় সেনসেক্স ছিল ৩৮ হাজার ৮৪৫ পয়েন্টে। সোমবার ৩৩ পয়েন্ট নীচে নেমে খোলে। দিনের শেষে ৮১২ পয়েন্ট নেমে সূচক পৌঁছে গিয়েছে ৩৮০৩৪ পয়েন্টে। নিফটি শুক্রবারের চেয়ে এক পয়েন্ট নেমে বাজার খোলার সময় ছিল ১১৫০৩ পয়েন্টে। ১১২৫০ পয়েন্টে নেমেছে বাজার বন্ধের সময়। সেপ্টেম্বর মাসে এটাই সবচেয়ে বড় পতন। দুই সূচকেই পতন হয়েছে ২ শতাংশেরও বেশি।
সোমবার ১১টি ক্ষেত্রেই বড় পতনের মুখ দেখেছে। নিফটি ফার্মা, মেটাল ও মিডিয়া পড়েছে ৪ শতাংশ। নিফটি ব্যাঙ্ক, অটো, এফএমসিজি, রিয়েলটি সেক্টরেও ২ থেকে চার শতাংশ নীচে নেমেছে। নিফটিতে টপ লুজারের তালিকায় হিন্ডালকো, ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক, টাটা মোটর্স, ভারতী এয়ারটেল, জি এন্টারটেনমেন্ট, জেএসডব্লিউ স্টিল, ভারতী ইনফ্রাটেল, মারুতি সুজুকি, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, মহিন্দ্রা অ্যান্ড মহিন্দ্রা, ওএনজিসি-র মতো শেয়ার। হিন্ডালকোর শেয়ারের দাম পড়েছে ৮ শতাংশ।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আরও পড়ুন: ‘ঐতিহাসিক ও প্রয়োজনীয়’, কৃষি বিলের পক্ষে ব্যাট ধরলেন মোদী
আরও পড়ুন: ‘কালো রবিবার’, কৃষি বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়ে বললেন মমতা
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সোমবারও প্রায় ৮৭ হাজার মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। টিকা কবে আসবে, তা অনিশ্চিত। এই পরিস্থিতির জেরে লগ্নিকারীরা কিছুটা সাবধানী ছিলেন। তার উপর রবিবার কৃষি বিল পাশ ঘিরে দেশের নানা প্রান্তে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ, সংসদে বিরোধীদের লাগাতার ধর্নার মতো বিষয়ের প্রভাব পড়েছে বাজারে। সব মিলিয়ে অনিশ্চয়তার জেরে শেয়ার বিক্রির ধুম পড়ে যায়। তার জেরেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লগ্নিকারীদের প্রায় ৪ লক্ষ ৫৮ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয় লগ্নিকারীদের।