প্রতীকী ছবি।
কয়েক মাস ধরে নাগাড়ে উঠছে তেলের দাম এবং শেয়ার বাজার। শেয়ারে তবু মাঝে মধ্যে সংশোধন হচ্ছে, পেট্রোপণ্যের ঊর্ধ্বগতি নিরবচ্ছিন্ন। বিশ্ব বাজারে চড়া অশোধিত তেল এবং ভারতে পেট্রল-ডিজ়েলে শুল্ক কমানো নিয়ে সরকারের অনমনীয় মনোভাবে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বহু রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দু’টি জ্বালানিই লিটারে ১০০ টাকা পেরিয়েছে। এটাই স্বস্তি কাড়ছে শেয়ার বাজারের। তেল অর্থনীতিকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করবে, সেই আশঙ্কা দানা বাঁধছে লগ্নিকারীদের মধ্যে।
গত মঙ্গলবার প্রথম বার ৬২ হাজারের ঘরে পা রাখার একটু পরেই সংশোধনের মুখে পড়ে সেনসেক্স। সূচক নামে ৬১,৭১৬ অঙ্কে। নামে পরের তিন দিনও, যথাক্রমে ৪৫৬, ৩৩৬ এবং ১০২। বেশ কিছু দিন পরে গত সপ্তাহে শেয়ার বিক্রির চাপ অনুভব করল বাজার।
এর অনেক কারণ। একটা তো অবশ্যই উঁচু বাজারে মুনাফা ঘরে তোলা। বহু শেয়ারের দাম ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় চলে যাওয়ায় অনেকেই লাভ তুলে নিতে দেরি করছেন না। জ্বালানির খরচ না-কমলে মূল্যবৃদ্ধি বেলাগাম হয়ে অর্থনীতির চাঙ্গা হওয়ার পথ রুদ্ধ করবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে।
অশোধিত তেল যত চড়া হোক, ভারতে পেট্রল-ডিজ়েলের দামের অনেকটাই কেন্দ্র এবং রাজ্যের মোটা অঙ্কের শুল্ক চাপানোর কারণে। প্রতি ১ টাকা শুল্ক কমালে বছরে কেন্দ্রের আয় কমতে পারে ১৪,০০০ কোটি টাকা। যা ছাড়তে নারাজ মোদী সরকার। বিরোধীদের অভিযোগ, জ্বালানির সেঞ্চুরি থেকে নজর ঘোরাতেই টিকার ডোজ়ের সেঞ্চুরি নিয়ে ঢাক-ঢোল পেটানো হচ্ছে। কোভিডকালের খরচ তোলা হচ্ছে তেলের শুল্ক থেকে। অথচ শিল্প এবং সাধারণ মানুষ দিশাহারা। আকাশছোঁয়া জ্বালানির ধাক্কায় এক দিকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের খরচ বাড়ছে, অন্য দিকে বিপাকে পড়েছে রং, খনন, পরিবহণের মতো তেল ব্যবহারকারী শিল্প।
এমন অবস্থায় বাজারকে কিছুটা রসদ জুগিয়েছে জুলাই-সেপ্টেম্বরের আর্থিক ফল। রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের লাভ ৪৩% বেড়ে পৌঁছেছে ১৩,৬৮০ কোটি টাকায়। জিএসডব্লিউ স্টিলের নিট লাভ প্রায় ৩৫০% বেড়ে পৌঁছেছে ৭১৭৯ কোটি টাকায়। ইয়েস ব্যাঙ্কের লাভ বেড়েছে ৭৪%, ইউনিলিভারের ৯%, নেস্লের ৫%।
আর একটি সুখবর, জমে উঠতে চলেছে আইপিও-র (বাজারে সংস্থার প্রথম শেয়ার) বাজার। একাংশ বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির সম্মতি পেয়েছে। কয়েকটি আবেদন করেছে। আইপিও-র হাত ধরে বাজারে নগদ ঢোকে। যা সূচকের ওঠার জ্বালানি।
(মতামত ব্যক্তিগত)