গত ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি জাতীয় আয়ের ৪ শতাংশে বেঁধে রাখা সম্ভব হয়েছে, কেন্দ্রের এই ঘোষণা ও ভাল বর্ষার পূর্বাভাসে সোমবার চাঙ্গা হল শেয়ার বাজার। রাজকোষ ঘাটতি বাগে আসায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমাতে পারে বলেও আশায় বুক বেঁধেছেন লগ্নিকারীরা। ফলে অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরার আশায় সোমবার সেনসেক্স বাড়ল ৩৬৩.৩০ পয়েন্ট। দিনের শেষে লেনদেন বন্ধের সময়ে তা থিতু হয় ২৭,৬৮৭.৩০ অঙ্কে।
প্রসঙ্গত, রবিবারই কেন্দ্র জানিয়েছে, গত অর্থবর্ষে সরকারের রাজকোষ ও রাজস্ব, এই দুই ঘাটতিই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে নেমে গিয়েছে আরও নীচে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজকোষ ঘাটতি দাঁড়িয়েছে জাতীয় আয়ের ৪%। লক্ষ্য ছিল ৪.১%। আর রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২.৮%। লক্ষ্য ছিল ২.৯%।
সোমবার অবশ্য ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম পড়েছে ২১ পয়সা। এক ডলার হয়েছে ৬৩.৭২ টাকা। প্রধানত ব্যাঙ্ক ও আমদানিকারীদের তরফে ডলারের চাহিদা বেড়ে যাওয়াই এর কারণ বলে বৈদেশিক মুদ্রার বাজার সূত্রে খবর। এর আগে অবশ্য টানা তিন দিনে টাকা বেড়েছে মোট ৬৬ পয়সা।
শেয়ার বাজারে সুদিন ফেরা নিয়ে লগ্নিকারীদের আশা অমূলক নয় বলেই মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। কারণ, শুধু রাজকোষ ঘাটতি নয়, অনেকটাই লাগাম পরানো গিয়েছে মূল্যবৃদ্ধির হারেও। বাজার বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই দু’টি বিষয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে সুদের হার কমাতে উৎসাহিত করতে পারে। বস্তুত, বেশ কিছু দিন পরে শেয়ার বাজারে আশা জাগানোর মতো কিছু ঘটনা ঘটল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রবীণ বাজার বিশেষজ্ঞ এবং স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ বলেন, ‘‘রাজকোষ ঘাটতি ৪ শতাংশে বেঁধে রাখাটা দেশের আর্থিক হাল ফেরারই ইঙ্গিতি। তবে উৎপাদন শিল্পে বৃদ্ধির হার কার্যত থমকে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদের হার কমানোর কথা ভাবা উচিত। সেটা হলে শিল্পের চাকায়ও গতি আসবে। যা অবশেষে শেয়ার বাজারকে চাঙ্গা করে তুলতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করবে।’’
তবে শেয়ার বাজারে অনিশ্চয়তা কেটে গিয়েছে বলে এখনই মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, এ দিন সূচকের উত্থানের অন্যতম কারণ হল, পড়তি বাজারে শেয়ার কেনার হিড়িক। বর্তমানে লগ্নিকারীরা কম দামে শেয়ার কিনে অল্প কিছুটা দর বাড়লেই তা বিক্রি করে দিয়ে মুনাফা ঘরে তুলে নিচ্ছেন। এই প্রবণতা চলতে থাকলে বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন না। তার জন্য জরুরি দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে শেয়ার কেনা। যেটা দেশের আর্থিক হাল স্থায়ী ভাবে ভাল হলে তবেই সম্ভব বলে ধারণা তাঁদের।