এমনিতেই বাজেটের পর থেকে মুখভার শেয়ার বাজারের। তার উপরে মাথাব্যথা বাড়িয়েছে অর্থনীতির স্বাস্থ্য। চাহিদা যে তলানিতে ঠেকেছে, তা গাড়ি বিক্রি কমার মতো হিসেবে স্পষ্ট হচ্ছিলই। এ বার চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে কিছু সংস্থার আর্থিক ফল ভাল না হওয়া উদ্বেগ বাড়াল। শুক্রবার সেনসেক্স নামল ৫৬০.৪৫ পয়েন্ট। চলতি বছরে যা দ্বিতীয় বৃহত্তম পতন। টানা দু’দিনে পতন ৮৭৮ পয়েন্টের বেশি। আর এই দু’দিনেই মুছল ৩.৭৯ লক্ষ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার সম্পদ। এর আগে বাজেটের পরে ৮ জুলাই সূচক নামে ৭৯২.৮২।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, বিশ্ব অর্থনীতি শ্লথ হওয়ায় রফতানি কমেছে। দেশে কাজ বাড়ার হিসেব তেমন মিলছে না। তার উপরে শ্রমনিবিড় রফতানি ক্ষেত্রে কোপ ও উৎপাদন শিল্পের ঝিমিয়ে থাকা কাজের বাজারকে আরও ফিকে করার বার্তা বয়ে এনেছে। এই অবস্থায় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৭.২% থেকে কমিয়ে ৭% করেছে। নাগাড়ে টাকা তুলছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থা। এই সবই টেনে নামাচ্ছে সূচককে, দাবি ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন চেয়ারম্যান কমল পারেখের।
তবে কোটাক মহীন্দ্রা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের বিপণন বিভাগের কর্থা মণীশ মেহতার মত, ‘‘বৃদ্ধি কয়েক বেসিস পয়েন্ট কমলেও তা অন্যান্য দেশের থেকে বেশি। যা সূচককে চাঙ্গা করবে।’’ দেকো সিকিউরিটিজের কর্ণধার অজিত দে-রও দাবি, ‘‘বিদেশি লগ্নিকারীদের কাছে বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে ভারত এখনও প্রথম পছন্দ।’’
এক ঝলকে
৫৬০.৪৫ পয়েন্ট পড়ল সেনসেক্স। দাঁড়াল ৩৮,৩৩৭ পয়েন্টে। টানা দু’দিনে সূচক পড়ল প্রায় ৮৭৮ পয়েন্ট। লগ্নিকারীরা হারালেন ৩.৭৯ লক্ষ কোটি টাকা।
আশঙ্কার ছবি
অর্থনীতির স্বাস্থ্য ফেরার লক্ষণ নেই। বিশ্ব অর্থনীতি শ্লথ হওয়ায় রফতানি কমেছে। দেশে লগ্নি ও উৎপাদনে ভাটার টানের ইঙ্গিত দিয়ে কমেছে আমদানি। হিসেব বলছে, কাজ বেশি হয়, এমন রফতানি ক্ষেত্রেই পড়েছে কোপ। অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে কিছু সংস্থার ফল ভাল হয়নি। আশঙ্কা, বাকিদের নিয়েও। বেসরকারি লগ্নিতে ভাটা। সমীক্ষা বলছে, পুঁজি ঢালায় অনাস্থা দেশীয় শিল্পেরও। চাহিদাও তলানিতে।
বন্ধন ব্যাঙ্ক। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে বন্ধন ব্যাঙ্কের নিট মুনাফা ৪৫% বেড়ে হয়েছে ৭০১ কোটি টাকা। ঋণ ও জমা বেড়েছে যথাক্রমে ৩৯.৩৬% ও ৪২.৩৩%। এমডি- সিইও চন্দ্রশেখর ঘোষ জানান, ‘‘ভবিষ্যতে সুদ কমার আশঙ্কায় স্থায়ী আমানতে দ্রুত জমানোর ঝোঁক বেড়েছে।’’
রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ। প্রথম ত্রৈমাসিকে সংস্থার নিট মুনাফা ৬.৮% বেড়ে হয়েছে ১০,১০৪ কোটি।