বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৫০ ডলারের নীচে নেমেছে। এবং তা আরও কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যার জেরে আমদানি খাতে আরও খরচ কমবে ভারতের। অথচ এই সুখবরের সুযোগ নিতে পারল-না সপ্তাহের প্রথম দিনের শেয়ার বাজার। বরং সংসদে টানা চলতে থাকা অচলাবস্থা সোমবার সেনসেক্সকে টেনে নামাল আরও ১৩৪.৬৭ পয়েন্ট।
বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি এই মুহূর্তে সূচকের উত্থানের অনুকূলে থাকলেও, সংসদের অচলাবস্থা নিয়ে প্রবল দুশ্চিন্তায় বাজার। কারণ, সেখানে চলতি বাদল অধিবেশনে পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি) এবং জমি বিলের মতো দেশের আর্থিক সংস্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি বিল পাশ হওয়ার কথা। কিন্তু রাজনৈতিক বিবাদের জেরে সংসদ অচল হয়ে পড়ার জন্য ইতিমধ্যেই ওই বিলগুলির ভবিষ্যৎ ঘিরে উঠে গিয়েছে প্রশ্ন চিহ্ন। সব পক্ষই বেশ বুঝতে পারছেন, এ রকম চলতে থাকলে বহু গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করা যাবে না এই অধিবেশনেও। আর এই উদ্বেগই বাজারের ওঠার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
অথচ সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে উন্নত মানের অপরিশোধিত তেল, ব্রেন্ট ক্রুডের দাম আগাম লেনদেনে ব্যারেল প্রতি ৩৬ সেন্ট কমে এসে দাঁড়ায় ৪৮.২৫ ডলারে। তেলের দামের এই উল্লেখযোগ্য পতনে সাধারণত ভারতের শেয়ার বাজার চাঙ্গা হয়ে ওঠার কথা। লেনদনের শুরুতে সেটা অবশ্য হচ্ছিলও। এ দিন বাজার খোলার পর সেনসেক্স দ্রুত উঠছিল। এক সময়ে তা গিয়ে ঠেকে ২৮,৪১৭.৫৯ অঙ্কে। কিন্তু সংসদ নিয়ে অনিশ্চয়তার জেরে সেই উত্থান স্থায়ী হতে পারেনি বলে জানিয়েছে শেয়ার বাজারমহল। ফলে দিনের শেষে শেয়ার বিক্রির জেরে দ্রুত নেমে আসে সূচকের পারা। শেষ পর্যন্ত বাজার বন্ধের সময় তা থিতু হয় ২৮১০১.৭২ অঙ্কে।
বাজার বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সেনসেক্সের ওঠাপড়া থেকে এটাই স্পষ্ট হয় যে, লগ্নিকারীরা বিনিয়োগের জন্য তৈরি থাকলেও শেয়ার বাজারের উপর তাঁরা ভরসা রাখতে পারছেন না। অনিশ্চিত বাজারে সাধারণত লগ্নির পর, অল্প কিছুটা দাম বাড়লেই শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যায় লগ্নিকারীদের মধ্যে। এই মুহূর্তে শেয়ার বাজারে ঠিক সেই পরিস্থিতিই দেখা যাচ্ছে বলে অভিমত তাঁদের। টানা শেয়ার বিক্রি করে চলেছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত শুক্রবার ওই সব সংস্থা ভারতের বাজারে শেয়ার বিক্রি করেছে ৯৩.৭৪ কোটি টাকার।