প্রতীকী ছবি।
অর্থনীতির প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না শেয়ার বাজারের ওঠানামায়। বিভিন্ন মাপকাঠির বিচারে ভারতের আর্থিক অবস্থা যখন কাহিল, ঠিক তখনই সূচক রেকর্ড উচ্চতায় বা তার আশেপাশে।
বৃদ্ধি কমেছে। চাহিদা তলানিতে। কমছে পরিকাঠামো ক্ষেত্রের উৎপাদন। রফতানি বাণিজ্য ধাক্কা খেয়েছে। মাথাচাড়া দিয়েছে রাজকোষে ঘাটতি বেলাগাম হওয়ার আশঙ্কা। অথচ সেনসেক্স ৪১ হাজারের কাছে। নিফ্টি ছুঁয়েছে ১২ হাজারের মাইলফলক। অনেকেরই প্রশ্ন, এই রকম নেতিবাচক পরিস্থিতিতে সূচকের এতটা উত্থান কোনও বুদ্বুদের জন্ম দেয়নি তো! হঠাৎই তা চুপসে যাবে কি! এই আশঙ্কায় কেউ কেউ শেয়ার বিক্রিও করছেন।
এই পরিস্থিতিতে বাজার কেন এমন বাড়ছে, তার কারণ খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে—
• চিন-মার্কিন শুল্ক সন্ধির আশা।
• ফান্ড মারফত বাজারে গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ৮,০০০ কোটি টাকা লগ্নি।
• কমলেও, ভারতে বৃদ্ধি বহু দেশের থেকে ভাল হওয়া। এই কারণে বিদেশি আর্থিক সংস্থার লগ্নি বহাল থাকা।
• সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আর্সেলর মিত্তলের পক্ষে রুগ্ণ এসার স্টিল অধিগ্রহণে আর বাধা না-থাকা। এতে এসারের ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলির বকেয়া কিছুটা উদ্ধার হবে। খাতা থেকে মুছে দেওয়া ধারের অনেকটা লাভ হিসেবে ফিরবে। ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাতেও ঢুকবে মোটা টাকা। ফলে চাঙ্গা ব্যাঙ্কিং শিল্প।
• ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক সংস্থা দেউলিয়া আইনের আওতায় আসায় ব্যাঙ্কগুলির সামনে আরও কিছু অনাদায়ি ঋণ উদ্ধারের পথ খোলা।
অনেকের অবশ্য মত, অদূর ভবিষ্যতে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে, এই আশায় বাজার উঠছে। লগ্নিকারীদের একাংশের মত, কেন্দ্রের নানা পদক্ষেপ ধীরে ধীরে সুফল দিতে শুরু করবে।
গত সপ্তাহে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের মোট শেয়ার দর প্রথম বার ছাড়ায় ১০ লক্ষ কোটি টাকা। ভারতে প্রথম কোনও সংস্থা এই জায়গায় পৌঁছল। শেয়ারের মোট মূল্যের ভিত্তিতে বিশ্বে রিলায়্যান্সের স্থান এখন ৬৬ নম্বরে।
এই বাজারে নতুন ইসু আনছে উজ্জীবন স্মল ফিনান্স ব্যাঙ্ক। তার আকার ৭৫০ কোটি টাকা। সোমবার খুলে বুধবার বন্ধ হবে ইসু।
রফতানি কমলেও ভারতের ভাণ্ডারে এখন রেকর্ড পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা। ২২ নভেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে তা ৩৪.৭ কোটি ডলার বেড়ে হয়েছে ৪৪,৮৬০ কোটি। তবে দেশে ডলারের দাম চড়াই। শুক্রবার এক ডলার ছিল ৭১.৭২ টাকা। এ দিকে কেন্দ্র জানিয়েছে, ২০২১ সালে ১৫ জানুয়ারি থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে সব সোনার গয়নায় হলমার্ক থাকতে হবে।
(মতামত ব্যক্তিগত)