নতুন ব্যবস্থা সেবির। — ফাইল চিত্র।
শেয়ার কিনলে ব্রোকারের মাধ্যমে টাকা মেটাবেন না লগ্নিকারী। তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে তা সরাসরি শেয়ার বাজার কর্তৃপক্ষের ক্লিয়ারিং কর্পোরেশনের অ্যাকাউন্টে যাবে। তবে লেনদেন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই টাকা লগ্নিকারীর অ্যাকাউন্টেই থাকবে— সম্প্রতি এমনই এক ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব দিয়েছে বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি। সংশ্লিষ্ট মহলের মতামত জানতে একটি আলোচনাপত্র প্রকাশ করেছে তারা। প্রস্তাব কার্যকর হলে এই নিয়ম আনার ক্ষেত্রে ভারতই হবে বিশ্বের প্রথম দেশ।
সূত্রের খবর, সেবির এমন উদ্যোগ দু’টি কারণে। এক, কোনও ব্রোকার যাতে লগ্নিকারীর সঙ্গে প্রতারণা করতে না পারে। দুই, জমা টাকায় লগ্নিকারী যাতে সামান্য সুদও না হারান। বর্তমান ব্যবস্থায় লগ্নিকারীকে শেয়ার কেনার আগে বা সঙ্গে সঙ্গে তার দাম ব্রোকারের কাছে জমা দিতে হয়। তার পরে নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে ব্রোকার সেই টাকা ক্লিয়ারিং কর্পোরেশনের অ্যাকাউন্টে পাঠায়। কিছু শেয়ারের ক্ষেত্রে লেনদেনের দিন এবং তার পরের দিন মিলে দু’দিনের (টি+১) মধ্যে পাঠায়। কিছু ক্ষেত্রে পাঠায় কেনার দিন এবং তার পরের দু’দিনের (টি+২) মধ্যে। ফলে ক্লিয়ারিং কর্পোরেশনের অ্যাকাউন্টে যাওয়ার আগের দুই বা তিন দিন টাকা ব্রোকারের অ্যাকাউন্টেই থাকে। তাতে সুদ পান না লগ্নিকারী। উল্টে তা ব্রোকারের ঝুলিতে ঢোকে। সূত্রের খবর, অনেক সময় ওই টাকা ব্রোকার ব্যবসার কাজে ব্যবহার করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
প্রস্তাবিত ব্যবস্থায় শেয়ারের দামব্রোকারের অ্যাকাউন্টে যাবে না। বরং শেয়ার কেনার পরে নির্দিষ্ট সময়ের (টি+১ বা টি+২) মধ্যে যাবে ক্লিয়ারিং কর্পোরেশনের কাছে। তবে লেনদেন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত লগ্নিকারীর অ্যাকাউন্টে টাকা আটকে (ব্লক) রাখা হবে। তিনি তা তুলতে পারবেন না। শুধু সুদ পাবেন। বাজার বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর দাবি, টাকা মেটানো ছাড়া লেনদেনের বাকি প্রক্রিয়ায় ব্রোকারদের ভূমিকা কমছে না। যেমন, শেয়ার কেনার বরাত সরাসরি তাদের দিতে হবে। লেনদেনও চলবে তাদের মাধ্যমে। সূত্র জানাচ্ছে, লগ্নিকারীদের স্বার্থ রক্ষাই সেবির লক্ষ্য। মার্চের মধ্যে নতুন নিয়ম আনতে চায় তারা।
আশিসবাবু জানান, প্রস্তাব কার্যকরহলে লগ্নিকারীকে টাকা মেটানোর ইউপিআই অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। অ্যাকাউন্টের সঙ্গে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কেরচালু করা ‘সিঙ্গল ব্লক মাল্টিপল ডেবিট’ (ইউপিআইয়ের এই ব্যবস্থায় অ্যাকাউন্টের মধ্যে কিছু টাকা আলাদা করে আটকে রাখা যায়) ব্যবস্থাটিকে যুক্ত করতে হবে। তবে ব্রোকারদের একাংশের দাবি, শেয়ারে লগ্নির ঝোঁকবেড়েছে মানুষের মধ্যে। কিন্তু সকলে প্রযুক্তির ব্যবহারে সড়গড় নন। এই নিয়মে অসুবিধা হতে পারে তাঁদের।