—প্রতীকী চিত্র।
ব্যাঙ্ক গ্রাহককে তাঁর অজান্তে সরকারি বিমার গ্রাহক বানিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে প্রিমিয়ামের টাকা কেটে নিয়েছিল স্টেট ব্যাঙ্ক। প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও, আইনি ব্যবস্থার হুমকি এবং দেশ জোড়া সমালোচনার মুখে সেই টাকা ফেরত দিল তারা। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ রয়েছে। এতে ব্যাঙ্কের পাশাপাশি মুখ পুড়ছে সরকারেরও। বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকের যেহেতু দাবি, কেন্দ্রই তাদের চালু করা বিমাগুলির বিক্রি বাড়াতে চাপ দেয় ব্যাঙ্ককে। তাই এই অনিয়ম। স্টেট ব্যাঙ্কের মতো ‘ভরসার’ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগও তুলেছেন একাংশ। ফলে নড়েচ়ড়ে বসেছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে বিভাগীয় প্রধানদের নির্দেশ দিয়েছেন এসবিআইয়ের বেঙ্গল সার্কেলের কর্তা।
ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞদের অবশ্য পরামর্শ, এর পরেও সচেতন থাকতে হবে গ্রাহককেই। পাসবুক আপডেট করতে হবে নিয়মিত। খুঁটিয়ে দেখতে হবে লেনদেনের খতিয়ান। যাঁরা প্রযুক্তি ব্যবহারে সাবলীল, তাঁদের অ্যাপ এবং নেট ব্যাঙ্কিংয়ে এই কাজ সারতে হবে।
গড়িয়ার বোড়ালের বাসিন্দা শুভজিৎ সরকারের অ্যকাউন্ট থেকে গত শনিবার তাঁকে না জানিয়ে ৪৩৬ টাকা কেটেছিল স্টেট ব্যাঙ্ক। পরে দেখা যায়, তা কাটা হয়েছে বিমার প্রিমিয়াম বাবদ। অবিলম্বে টাকা ফেরানোর দাবি জানান তিনি। আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারিও দেন। টাকা ফিরে পেলেও ক্ষুব্ধ শুভজিতের বার্তা, “ওরা ফেরাতে বাধ্য ছিল। হেনস্থার প্রতিবাদে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যাব।’’
‘ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও’ মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক সৌম্য দত্তের বক্তব্য, আগেও এই অনিয়ম ঘটেছে। যে কারণে অতীতে গ্রাহকের অজান্তে টাকা না-কাটার নির্দেশ দিয়েছিল স্টেট ব্যাঙ্ক। কিন্তু তা যে মানা হচ্ছে না, স্পষ্ট হল। প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কই এটা করছে। বহু গ্রাহক প্রতারিত হচ্ছেন। পরিমাণ অল্প বলে অনেকে খেয়ালই করছেন না। আমরা এ় মাসেই এর বিরুদ্ধে জনস্বর্থের মামলা করব।’’ তবে ন্যাশনালাইজ়ড ব্যাঙ্ক অফিসার্স ফেডারেশনের সাধারণ সস্পাদক সঞ্জয় দাসের দাবি, বিমাগুলির বিক্রি বাড়াতে চাপ দেয় কেন্দ্র। ব্যাঙ্ক মানতে বাধ্য হয়।
বিষয়টি নিয়ে ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেনের পরামর্শ, ‘‘গ্রাহককেই সজাগ হতে হবে। অ্যাপ, নেট ব্যাঙ্কিং বা প্রথাগত পাসবইয়ে নিয়মিত লেনদেনগুলি খতিয়ে দেখতে হবে।’’