শক্তিকান্ত দাস, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর
বার বারই অভিযোগ ওঠে যে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমালেও ব্যাঙ্কগুলি তার পুরো সুবিধা সাধারণের কাছে পৌঁছে দেয় না। এ নিয়ে ব্যাঙ্কগুলিকে বলেছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক এবং কেন্দ্রও। এ বার এই বিতর্কের মধ্যে ১ জুলাই থেকে রেপো রেটের (বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে যে সুদে ধার নেয়) সঙ্গে যুক্ত গৃহঋণ প্রকল্প আনার কথা জানাল স্টেট ব্যাঙ্ক। শুক্রবার ব্যাঙ্কের বেঙ্গল সার্কেলের চিফ জেনারেল ম্যানেজার আর কে মিশ্র বলেন, ‘‘ওই প্রকল্পে যাঁরা ঋণ নেবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সুদের হার রেপো রেটের সঙ্গে তাল রেখে ওঠানামা করবে।’’
বৃহস্পতিবার ধরে টানা তিনটি ঋণনীতিতে সুদ কমিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তা দাঁড়িয়েছে ৫.৭৫%। কিন্তু বহু দিন ধরেই বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, রেপো রেট কমলেও ব্যাঙ্কগুলি ঋণে সুদ কমানোয় গড়িমসি করে। কিন্তু রেপো বাড়লে সুদ বাড়াতে তৎপরতা দেখা যায় তাদের মধ্যে। এই অবস্থায় ফেব্রুয়ারির ঋণনীতির পর পরই স্টেট ব্যাঙ্ক জানিয়েছিল, এখন থেকে শর্ত সাপেক্ষে রেপো রেটের উপর ভিত্তি করে সুদের হার ঠিক করবে তারা।
সেই সময়ে যে সব গ্রাহকের সেভিংস অ্যাকাউন্টে ১ লক্ষ বা তার বেশি টাকা আছে, তাঁরাই রেপো রেটের ভিত্তিতে স্থির করা হারে সুদ পাবেন বলে ঘোষণা করেছিল ব্যাঙ্কটি। বলা হয়, ১ লক্ষ টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রেও রেপো রেটের উপর ভিত্তি করে সুদ ঠিক হবে (এ দিন তা কমানো হয়েছে)। আর এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে রেপোর সঙ্গে যুক্ত গৃহঋণ প্রকল্প আনার কথা ঘোষণা করল স্টেট ব্যাঙ্ক। যেখানে রেপো বাড়লে সুদ বাড়বে, আবার তা কমলে ঋণে সুদও কমবে। যদিও সমস্ত গৃহঋণকে রেপো রেটের আওতায় আনা হচ্ছে না।
অনেক সময়েই রেপো কমলেও সুদ না-কমানোর যুক্তি হিসেবে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বলেন যে, রেপো রেটে স্বল্প মেয়াদি ঋণ পায় ব্যাঙ্কগুলি। তাই তার ভিত্তিতে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণে সুদ ঠিক করা ঝুঁকির। কিন্তু স্টেট ব্যাঙ্কের এ দিনের সিদ্ধান্ত ওই সাফাইয়ে কিছুটা জল ঢেলে দিল বলে মনে করছেন ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কেউ কেউ।