সৌদ বিন মহম্মদ আল সাতি। পিটিআই
গত ফেব্রুয়ারিতে ভারতে এসে সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের বার্তা ছিল, দু’বছরে এ দেশে অন্তত ১০ হাজার কোটি ডলারের লগ্নি সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন তিনি। এ বার ওই একই অঙ্কের লগ্নির ইঙ্গিত দিলেন সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত সৌদ বিন মহম্মদ আল সাতি। দাবি করলেন, তাঁদের কাছে ভারত লগ্নির আকর্ষণীয় ঠিকানা। বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা আঁচ করেই এ দেশের বাজারকে পাখির চোখ করছেন তাঁরা। যার নিট ফল হিসেবে সৌদি লগ্নির গন্তব্য হতে পারে তেল, গ্যাস, পেট্রোকেমিক্যাল, শোধনাগার থেকে শুরু করে পরিকাঠামো, কৃষি, খনিজ ও খননের মতো ক্ষেত্র।
ঝিমিয়ে থাকা অর্থনীতি নিয়ে এই মুহূর্তে নাস্তানাবুদ মোদী সরকার। এই পরিস্থিতিতে সাতির দাবি, নয়াদিল্লির সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদি সম্পর্ক তৈরির কথা ভাবছে সৌদি। ১০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের হাত ধরে তৈরি হতে পারে যার ভিত। ইরান থেকে তেল কেনায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জেরে তৈরি হওয়া ঘাটতিও পূরণেরও আশ্বাস দিয়েছেন সাতি। বলেছেন, সম্প্রতি ড্রোন হানায় রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা সৌদি অ্যারামকোর উৎপাদন কমলেও, ভারতের তেল-গ্যাস ক্ষেত্রে সংস্থা লগ্নির দায়বদ্ধতা পূরণে অনড়।
বিশেষজ্ঞেরা অবশ্য বলছেন, এই উদ্যোগ প্রত্যাশিতই। কারণ, তেল-গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধির হারে চিনকে টেক্কা দিয়ে ভারত বিশ্বে দ্রুততম। ফলে এমন সম্ভাবনাময় বাজারকে হাতছাড়া করতে চায় না সৌদি। যে কারণে বার বার তেল শোধন, পেট্রোপণ্যে লগ্নির কথা বলছে রিয়াধ। আগ্রহ দেখাচ্ছে পেট্রোল পাম্প খোলায়। অ্যারামকোও মহারাষ্ট্রে শোধনাগার ও পেট্রোকেমিক্যাল প্রকল্পে অংশীদার হতে চুক্তি করেছে। প্রস্তাব দিয়েছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের তেল শোধন ও পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবসায় থাকতেও। সাতির বার্তা, দুই প্রস্তাবকে পুঁজি করে দু’দেশের সম্পর্ক আরও পোক্ত হবে।
লগ্নির বার্তা এসেছে তেল, গ্যাসের বাইরেও। পেট্রোপণ্যে সৌদি অর্থনীতির নির্ভরতা কমাতে যে ‘ভিশন ২০৩০’-এর পরিকল্পনা করছেন যুবরাজ, তাতে অন্যান্য ক্ষেত্রেও ভারতকে সঙ্গী করার ইঙ্গিত দিয়েছেন সাতি।