প্রতীকী ছবি।
অসময়ের ঢাল হিসেবে সাধারণ রোজগেরে মানুষের মধ্যে জমানো টাকা দিয়ে একটু একটু করে সোনার গয়না কিনে রাখার চল রয়েছে এ দেশে। ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিতে সম্বলও সেটাই। গত বছর করোনার প্রথম কামড়ে সেই সোনা বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার ঢল নেমেছিল। দ্বিতীয় কামড়ে বিক্রির ঝোঁক বাড়ছে। বিপদের ঢাল হিসেবেই। গয়না ব্যবসায়ীদের দাবি, আগে দিনে যত টাকার গয়না বিক্রি করতেন, তার অল্প অংশ দিয়ে পুরনো গয়না কিনতেন। কিন্তু সেই বহর বাড়ছে।
পরিসংখ্যান বলছে, অতিমারি সর্বস্বান্ত করেছে বহু মানুষকে। কেউ চাকরি খুইয়েছেন। কারও বেতন কমেছে। বিপর্যস্ত ছোট ব্যবসায়ীরা। অনেকে কারবার বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন। গয়না ব্যবসায়ীদের দাবি, ঘরের সোনা নিয়ে দোকানে বেচতে আসা মানুষের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে গিয়েছে। মূলত ছোট দোকানগুলিতে। তাদের সূত্রের দাবি, সোনার দাম বাড়ায় গয়না বেচে বেশি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে আয় তলানিতে ঠেকা অনেকেই শেষ সম্বল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বনগাঁর বিপণি নিউ সিন্হা জুয়েলার্সের মালিক বিনয় সিংহ জানান, ‘‘আগে দিনে যত টাকার গয়না বেচতাম, তার প্রায় ১০% দিয়ে পুরনো গয়না কিনতাম। এখন তা-ই বেড়ে হয়েছে ৩০%। বিশেষত ছোট ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মধ্যবিত্তরা গয়না নিয়ে আসছেন।’’ গয়না বন্ধকের কারবারও মাস ছয়েকে প্রায় ৩০% বেড়েছে, দাবি বেলঘড়িয়ার গয়না ব্যবসায়ী কৌশিক পোদ্দারের।
বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পি সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দার জানান, ‘‘গয়না বিক্রি করতে আসছেন বহু মানুষ। কিন্তু সেগুলি কেনার রসিদ না-থাকায় ফিরেও যেতে হচ্ছে অনেককে। পুলিশি ঝামেলার ভয়ে ওই গয়না কিনতে সাহস পাচ্ছেন না দোকানদারেরা।’’
তবে বড় শোরুম মালিকদের সংগঠন জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আশিস পেথে বা গিনি এম্পোরিয়ামের মালিক সমর দে-র মতে, ‘‘অস্বাভাবিক হারে পুরনো গয়না বিক্রির নজির অন্তত আমাদের কাছে নেই।’’