২০২১ সালের চেয়ে মুদিপণ্যের বিক্রি বেড়েছে ১০%। ফাইল ছবি।
কিনছেন বটে। তবে বুঝেশুনে।
অতিমারির ধাক্কা কাটিয়ে কেনাকাটায় বৃদ্ধির গতি দেখে কিছুটা আশান্বিত দেশের খুচরো ব্যবসা মহল। ডিসেম্বরের বিক্রির হিসাবে, প্রাক্-করোনা পর্বের (২০১৯) ডিসেম্বরের চেয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আয় বেড়ছে এই ব্যবসার। তা যেমন কিছুটা ভরসা জোগাচ্ছে, তেমনই রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (আরএআই) সমীক্ষা বলছে, কেনাকাটার বহর বাড়লেও ক্রেতারা এখনও যথেষ্ট সতর্ক। বিশেষ করে অত্যাবশ্যক নয়, এমন পণ্য কেনার বিষয়ে। আর দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় খাবার, জামাকাপড়ের মতো পণ্যের ক্ষেত্রে বিক্রি বেড়েছে ঠিকই। কিম্তু বৃদ্ধির হার তুলনায় কম।
স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হলেও করোনার পরে বাজারে কেনাবেচার ধরনের নানা বদল সামনে এসেছে। যেমন, দামি গাড়ির চাহিদা যেমন বেড়েছে, ধাক্কা খেয়েছে কম দামি গাড়ির বাজার। আবার খাবার-সহ দৈনন্দিন জীবনের অত্যাবশ্যক পণ্যের দাম অনেকটাই বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষ কাটছাঁট করেছেন সেই বাজেটে। বরং চাহিদা বেড়েছে ছোট প্যাকেটজাত পণ্যের।
আরএআইয়ের সমীক্ষা বলছে, ২০১৯ সালের চেয়ে গত ডিসেম্বরে সার্বিক ভাবে খুচরো ব্যবসা বেড়েছে ১৬%। জুতো (২৯%), গয়না (২৬%), ক্রীড়া সরঞ্জাম (২৫%), আসবাবপত্র ও গৃহসজ্জার সরঞ্জামের (১৯%) কেনাকাটা বেড়েছে ভালই। ব্যবসা বাড়লেও বৃদ্ধির হার ততটা নয় ভোগ্যপণ্য ও বৈদ্যুতিন পণ্য (৬%), জামাকাপড় (৯%), প্রসাধনী (৮%), খাবার ও মুদিদ্রব্য (১৪%), চটজলদি খাবারের রেস্তরাঁর (১৩%)। ২০২১ সালের চেয়ে অবশ্য মুদিপণ্যের বিক্রি বেড়েছে ১০%, পোশাকের ১২%।
সংগঠনের সিইও কুমার রাজাগোপালনের মতে, লকডাউন কাটিয়ে উঠে সব কিছু চালুর পরে কিছু দিন কেনাকাটার আগ্রহ যতটা বেড়েছিল, সেই উচ্ছ্বাস কিছুটা স্তিমিত হয়েছে। পাশাপাশি, অত্যাবশ্যক না হলেও বেড়ানো বা অনুষ্ঠানের জন্য হঠাৎ প্রয়োজনে ক্রেতারা কেনাকাটা করছেন। তবে তা-ও সতর্কতার সঙ্গে। তা হলে কি এক শ্রেণির মানুষে হাতে বাড়তি অর্থ থাকায় তাঁরা জরুরি নয়, এমন প্রয়োজনেও খরচ করছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য তাঁদের সমীক্ষায় সেই আর্থ-সামাজিক বিভাজন স্পষ্ট নয় বলেই জানান কুমার। তাঁর বক্তব্য, মধ্যবিত্তও হয়তো অনুষ্ঠানের জন্য জরুরি নয়, এমন পণ্য কেনায় সাময়িক খরচ করছেন। এই প্রবণতা বাজারের পক্ষে ভাল না খারাপ, তা নিয়েও বলার সময় আসেনি। এ জন্য আরও দু’চার মাস অপেক্ষা করা জরুরি।