প্রতীকী ছবি।
গত দু’মাস দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার রয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সহনসীমার (৬%) উপরে। জানুয়ারিতে ৬.০১% এবং ফেব্রুয়ারিতে ৬.০৭%। এ বার সেই মূল্যবৃদ্ধিকে ঘিরে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের সমীক্ষায় জানানো হল, গত মাসেও সম্ভবত তা ছিল ৬ শতাংশের উপরেই। শুধু তা-ই নয়, খাদ্যের চড়তে থাকা দামের কাঁধে চেপে মূল্যবৃদ্ধির হার পৌঁছে গিয়ে থাকতে পারে ৬.৩৫ শতাংশের কাছাকাছি। আর সত্যিই যদি তা হয়, সে ক্ষেত্রে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার হতে চলেছে ১৬ মাসের সর্বোচ্চ। মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রকাশ করার কথা সরকারের।
গত ৪-৮ এপ্রিল ৪৮ জন অর্থনীতিবিদের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে রিপোর্টটি তৈরি করেছে রয়টার্স। সেখানে জানানো হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বেড়েছে। কিন্তু ভারতের খুচরো বাজারে তার প্রতিফলন শুরু হয়েছে অনেক পরে। সে কারণে পেট্রল-ডিজ়েলের দামের প্রভাব সম্ভবত মার্চের মূল্যবৃদ্ধির উপরে পড়বে না। তার প্রভাব পড়তে পারে এপ্রিলে। কিন্তু যুদ্ধের বাজারে সরবরাহ ব্যবস্থা ধাক্কা খাওয়ায় খাবারের দাম বেড়েছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে দাম বেড়েছে সূর্যমুখী তেল-সহ বিভিন্ন রকমের ভোজ্য তেলের। আর ভারতে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে খাদ্যের গুরুত্ব প্রায় ৫০%। এর ফলেই বড় লাফ দিয়ে থাকতে পারে মূল্যবৃদ্ধি। সমীক্ষায় যোগ দেওয়া অর্থনীতিবিদেরা ৬.০৬-৬.৫০% মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা বলেছেন। গড় মোটামুটি ৬.৩৫%। ওয়াকিবহাল মহলের আশঙ্কা, এর পরে এপ্রিলে যদি সত্যিই তেলের দামের প্রভাব পড়ে, তবে ওই হার কোন জায়গায় পৌঁছবে! অতিমারির জেরে এখনও কাজের বাজারে ঠিক ভাবে ফিরতে না পারা মানুষ এবং গরিব লোকেদের কী পরিস্থিতি হবে!
সমীক্ষায় যোগ দেওয়া অর্থনীতিবিদ ধীরাজ নিমের বক্তব্য, ‘‘ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খাদ্যের দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু তার পরেই তা অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে মার্চে মূল্যবৃদ্ধির হার ৬.৩০ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে।’’ অর্থনীতিবিদদের একাংশের বক্তব্য, দাম ইতিমধ্যেই যে জায়গায় পৌঁছেছে তাতে সুদ নিয়ে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের আরও সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল। যা হয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেনে।