—প্রতীকী ছবি।
অর্থনীতির জোড়া উদ্বেগ। যে মূল্যবৃদ্ধিকে আরও খানিকটা মাথা নামাতে দেখার অপেক্ষায় হা-পিত্যেশ করে বসেছিল গোটা দেশ, তা বাড়ল। আর যে শিল্পোৎপাদনের গতি আরও বৃদ্ধির আশা ছিল, তা গেল তলিয়ে।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানে প্রকাশ, দেশের মানুষের পাতে খাবারের খরচ আরও চড়েছে। তার ধাক্কায় গত মাসে খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধি পৌঁছেছে ৫.৬৯ শতাংশে। চার মাসে সর্বোচ্চ। অন্য দিকে, নভেম্বরে শিল্প বৃদ্ধি নেমেছে ২.৪ শতাংশে। আট মাসে সব থেকে কম। চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত সর্বনিম্ন। অক্টোবরে এই হার ১১.৬% ছোঁয়ায় উৎপাদনে আরও গতি আসার প্রত্যাশা ছিল। বিশেষত মোদী সরকার যেহেতু অর্থনীতির জমি আরও পোক্ত হওয়ার যুক্তিতে চলতি অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়িয়ে ৭.৩% করেছে। এ দিন কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ছবিটা উল্টো হওয়ার জন্য দায়ী মূলত কল-কারখানার উৎপাদনে ভাটার টান।
গত মাসে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৯.৫৩%। নভেম্বরে বেড়েছিল ৮.৭%। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, খরচ যখন বাড়ছে তখন কাজের পরিসর কমেছে শিল্প গতি হারানোয়। কল-কারখানায় বৃদ্ধির হার ১.২%। যেখানে উৎপাদন বাড়লে কর্মসংস্থান মাথা তোলে। সম্প্রতি উপদেষ্টা সিএমআইই-র রিপোর্টে স্পষ্ট হয়েছে, দেশে বেকারত্ব এখনও চড়া। কিছু ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশেরও বেশি। একাংশের দাবি, ভোটের মুখে এই সব সংখ্যা বিরোধীদের হাতে আক্রমণের অস্ত্র তুলে দিল। এ দিন এক্স-এ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যখন ভারতের কোথাও নতুন একটি ল্যাম্প পোস্ট বসলেও তার কৃতিত্ব নিতে ব্যস্ত, তখন অত্যাবশ্যক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সম্পূর্ণ বেলাগাম হয়েছে।’’
বর্ষা কম হওয়ায় খাদ্যপণ্যের দাম চড়ার আশঙ্কা ছিলই। কারণ ফলন কমলে জোগান কমার কথা। রমেশের অভিযোগ, খুচরো বাজারে পণ্যের দাম যখন বাড়ছে, তখন যুব সম্প্রদায় চাকরি পাচ্ছেন না। বেকারত্বের হার ২৫-২৯ বছর বয়সিদের মধ্যে চার বছরে সব থেকে বেশি। তিন বছরে সর্বোচ্চ ৩০-৩৪ বছর বয়সিদের। ২০-২৪ বছর বয়স যাঁদের, তাঁদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ধাক্কা দেওয়ার মতো, ৪৫.৫%। তাঁর কথায়, ‘‘চাকরি এবং বেতন পণ্যের দামের মতো বাড়ছে না। বেশির ভাগ পরিবারে সংসার চালানোর খরচ মোদী সরকারের আক্রমণের মুখে পড়েছে। এটা পরিবর্তন চাওয়ার সময়।’’