ফাইল চিত্র।
বেশ কিছু রাজ্য যে ভাবে নানা ক্ষেত্রে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়াচ্ছে, তা চিন্তায় ফেলার মতো বলে মনে করছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। বৃহস্পতিবার অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রিপোর্টে শীর্ষ ব্যাঙ্কের বক্তব্য, এর ফলে ওই রাজ্যগুলির খরচ লাফিয়ে বাড়ছে। অনেকেরই উন্নয়নের কাজে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এর আগে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন সতর্ক করেছিল, জানিয়েছে আরবিআই। এর পাশাপাশি রিপোর্টে উদ্বেগের ইঙ্গিত কেন্দ্রের বাড়তে থাকা সুদের বোঝা নিয়েও। যা এপ্রিল-অক্টোবরে বেড়েছে আগের বছরের থেকে ১৯.৯%। রাজস্ব আয়ের তুলনায় অনেক বেশি। যদিও কেন্দ্রের বিপুল কর আদায় বা রাজকোষ ঘাটতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারা নিয়ে আশ্বস্ত করেছে তারা।
রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ভারতে বিশ্ব বাজারের ধাক্কার ঝুঁকি নিয়েও। সেই ঝুঁকি আন্তর্জাতিক অর্থনীতি শ্লথ হওয়ার, চাহিদা কমার, পণ্যের চড়া দামের এবং বিদেশি লগ্নি প্রবাহ থমকে যাওয়ার। যে কারণে রফতানিতে সঙ্কট বহাল। ফলে আমদানি বৃদ্ধির কারণে চওড়া হওয়া বাণিজ্য ঘাটতির উদ্বেগও থাকছে। তার জেরে বাড়ছে চলতি খাতে ঘাটতি। তবে মোটের উপর দেশের আর্থিক হাল ভাল বলেই জানিয়েছে আরবিআই। তাদের দাবি, ব্যাঙ্কে মোট অনুৎপাদক সম্পদ নেমেছে ৫ শতাংশে, যা ৭ বছরে সব থেকে কম। নিট হিসাবেতার ১.৩% হার এক দশকে সর্বনিম্ন। ব্যাঙ্ক ঋণের চাহিদা বাড়ছে। যা লগ্নিতে গতি আসার ইঙ্গিত।
শীর্ষ ব্যাঙ্ক বলেছে, ২০২০-২১ সালে রাজ্যগুলিতে ভর্তুকি বেড়েছে ১২.৯% হারে। ২০২১-২২ সালে তা ১১.২%। বহু রাজ্য ভর্তুকি দিচ্ছে ‘নন-মেরিট এক্সপেন্ডিচার’ খাতে। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে যে খরচ অর্থনীতিকে কোনও সুফল দেবে না। ফলে অনেককেই কমাতে হতে পারে উন্নয়ন এবং মূলধনী খাতের খরচ। যা তাদের অগ্রগতির পথ আটকাতে পারে।
পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিক বলেন, “অপ্রয়োজনীয় খাতে ভর্তুকি বিরাট সমস্যা। এগুলি আসলে রাজনৈতিক লাভের জন্য দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য আর্থিক ভাবে পোক্ত হলে হয়তো উন্নয়নে ভাটা পড়বে না। কিন্তু রাজকোষ ঘাটতি থাকলে রাজ্যের মাথাপিছু ঋণ বৃদ্ধির আশঙ্কা। কমবে উন্নয়নের খরচ। তাই ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভেবেচিন্তে নেওয়া উচিত।’’
অবশ্য সার্বিক ভাবে রাজ্যগুলির আর্থিক অবস্থার উন্নতির কথাও বলেছে আরবিআই। জানিয়েছে, অতিমারির সময়ে যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, পরিকল্পনার মাধ্যমে তা পূরণ করার ব্যবস্থা করেছে তারা।