ফাইল চিত্র।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ফিকে হয়ে আসা এবং দেশ জুড়ে টিকাকরণের আগ্রাসী পদক্ষেপে অদূর ভবিষ্যতে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা উজ্জ্বল হচ্ছে, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের এক প্রবন্ধে এমনটাই বলা হল। দাবি করা হল, পণ্যের যে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আমজনতার নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়, তা মূলত অতিমারির আবহে জোগান-শৃঙ্খলের ধাক্কা খাওয়া এবং বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল ও পণ্যের চড়া দামের জের। তবে তার পেছনে বর্ধিত করের হাত আছে বলেও মেনে নেওয়া হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন পাম্পে লিটার পিছু ১০০ টাকা পেরনো পেট্রলের কথা। প্রবন্ধে ইঙ্গিত, চড়া মূল্যবৃদ্ধির দুর্ভোগ বহাল থাকবে আরও কয়েক মাস। চাহিদার ভাল মতো বেড়ে উঠতেও সময় লাগবে।
প্রবন্ধটি যৌথ ভাবে লিখেছেন আরবিআইয়ের ডেপুটি গভর্নর এম ডি পাত্র এবং অন্যান্য আধিকারিকেরা। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে সেখানে প্রকাশিত কথাগুলি লেখকদের দৃষ্টিভঙ্গি, তাদের নয়।
প্রবন্ধে দাবি, অর্থনীতির বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেশের আর্থিক কর্মকাণ্ড চাঙ্গা হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে। বর্ষা ভাল হওয়ায় কৃষি উৎপাদনও চাঙ্গা। তবে কল-কারখানায় উৎপাদন এবং পরিষেবা ক্ষেত্র দ্বিতীয় ঢেউয়ে ধরাশায়ী। জোগানে আঘাত লাগায় বিশেষত খাদ্যপণ্যের দাম যেখানে উঠেছে, সেখান থেকে নামা শুরু করতে আরও কয়েক মাস লাগবে। সে ক্ষেত্রে চলতি অর্থবর্ষের অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিক গড়াতে পারে, যখন খরিফ শস্য ঢুকবে বাজারে।
বাজারে খাদ্যপণ্য-সহ বিভিন্ন জিনিসের চড়া দামে নাজেহাল মানুষ। রুজি-রোজগারে ধাক্কা খাওয়া বহু পরিবারের সংসার চালানোই দায় হয়েছে। অনেকে এর জন্য দুষছেন মোদী সরকারকে। যার প্রধান কারণ চড়া তেলের দাম। অভিযোগ, পেট্রল-ডিজেলে বিপুল হারে যে উৎপাদন শুল্ক বসিয়ে রেখেছে কেন্দ্র, বার বার আর্জি সত্ত্বেও তাতে বিন্দুমাত্র ছাড় দিয়ে সাধারণ মানুষকে সুরাহা দেওয়ার পথে হাঁটছে না তারা। অথচ জ্বালানি খাতে উৎপাদন এবং পরিবহণের খরচ বাড়ায় পণ্যের দাম চড়ছে।
এ দিনই এক অনুষ্ঠানে আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের আশ্বাস, সমাজের সব স্তরে আর্থিক উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দেওয়ার কাজকেই অগ্রাধিকার দেবেন তাঁরা। যাতে অতিমারি-উত্তর অর্থনীতির উন্নতিতে সকলে সমান ভাবে লাভবান হন।