গাঁটছড়া বাঁধল মুকেশ অম্বাণীর রিলায়্যান্স জিয়ো এবং মার্ক জাকারবার্গের ফেসবুক। —ফাইল চিত্র
করোনাভাইরাসের প্রকোপ এবং তা রুখতে লকডাউনের মধ্যেই বড়সড় বাণিজ্যচুক্তি করলেন মুকেশ অম্বানী এবং মার্ক জাকারবার্গ। ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে নতুন ই-কমার্স ব্যবসার উদ্যোগ নিল রিলায়্যান্স। দেশের ছোট ও ক্ষুদ্র মুদিখানা ও স্টেশনারি দোকানগুলিকে এক ছাতার তলায় এনে নতুন ‘ই-কমার্স’ মডেলের উদ্যোগ শুরু করল দুই সংস্থা। অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশের মাঝারি, ছোট, ও ক্ষুদ্র দোকানগুলিকে নিয়ে বাড়ি বাড়ি পণ্য পৌঁছে দেওয়ার এই মডেল বিরাট সম্ভাবনাময়।
ভারত জুড়ে লকডাউনের মধ্যেও ছাড় দেওয়া হয়েছে ই-কমার্স সংস্থাগুলির অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহে। সারা দেশের মানুষের চাহিদার একটা বড় অংশই মেটাচ্ছে এই সব ই-কমার্স সংস্থাগুলি। তার মধ্যেই ফেসবুক ও জিয়ো ঘোষণা করল নতুন একটি ই-কমার্স মডেল। রিলায়্যান্সের পক্ষ থেকে ভিডিয়ো বার্তায় মুকেশ অম্বানী বলেছেন, সারা দেশের প্রায় ৩ কোটি মুদিখানা ও স্টেশনারি দোকানকে জুড়ে তৈরি হবে সংস্থার নতুন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ‘জিয়োমার্ট’। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, এই জিয়োমার্টের মাধ্যমে স্থানীয় দোকান থেকে জিনিসপত্র অর্ডার দিতে পারবেন। সেই অর্ডার নিয়ে বাড়ির দরজায় পৌঁছে দেবে জিওমার্ট। প্রায় একই রকম বার্তা দিয়েছেন ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ কর্ণধার মার্ক জাকারবার্গ।
অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, হোয়াটসঅ্যাপ ভারতে বিপুল জনপ্রিয়। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের প্রায় সবাই এই মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করেন। অন্য দিকে সস্তায় ইন্টারনেট কানেকশনের দিয়ে ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে জিয়ো। ফলে দুই সংস্থার তথ্যপ্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম গ্রাহকদের কাছে শুধু পরিচিতই নয়, রীতিমতো জনপ্রিয়। তাই কার্যত ৭০ শতাংশ কাজ তৈরিই রয়েছে দুই সংস্থার। এখন শুধু ছোট ও ক্ষুদ্র দোকানগুলিকে জোড়ার পালা। তার পরেই বিপুল সম্ভাবনাময় একটা জগৎ খুলে যাবে। যার ফলে ঘরে বসে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাড়ার ছোট দোকান থেকেও মানুষ জিনিসপত্র কিনতে পারবেন।
আরও পড়ুন: সঙ্ঘাত তো শেষ কালই, আজও কেন ঘরে বসে কেন্দ্রীয় দল?
রিলায়্যান্সের ৯.৯৯ শতাংশ শেয়ার কিনে নিয়েছে মার্ক জাকারবার্গের সংস্থা ফেসবুক। দুই সংস্থার তরফেই এই ঘোষণা হয়েছে বুধবার। জাকারবার্গ বিনিয়োগ করছেন ৪৩ হাজার কোটিরও বেশি টাকা। এই চুক্তির হাত ধরে ভারতের খুচরো বাজারে প্রবেশ করলেন মার্ক জাকারবার্গও। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দুই বিজনেস জায়ান্টের গাঁটছড়ায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি হল। বড় দোকান, শপিং মল চেন বা ই-কমার্সের বাইরেও যে বিরাট সংখ্যক ছোট মুদিখানা-স্টেশনারি দোকান রয়েছে, সেই অংশের বাজার ধরতে উদ্যোগী হয়েছে দুই সংস্থা। দুই সংস্থার দিক থেকে যেমন সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি গ্রাহকদের কাছেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার ক্ষেত্রে নতুন একটি দিক খুলে যাবে।
আরও পড়ুন: মুকেশ অম্বানীর জিয়োর প্রায় ১০ শতাংশ শেয়ার কিনল ফেসবুক
মুকেশ অম্বানীও ভিডিয়ো বার্তায় বলেছেন, ‘‘আমাদের দুই সংস্থা একসঙ্গে ভারতের ডিজিটাল অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে। আপনাদেরও ডিজিটাল অর্থনীতিতে সক্ষম ও সমৃদ্ধ করে তুলবে। আমাদের অংশীদারিত্ব ভারতকে বিশ্বের অন্যতম দিক নির্দেশক ডিজিটাল সমাজ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। আবার দোকানদারদের ক্ষেত্রেও ব্যবসা বাড়ানোর সুযোগ খুলে যাবে। তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থান।