—প্রতীকী চিত্র।
ফ্ল্যাট-বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে চুক্তির খেলাপ হলে (বিক্রেতা বা ক্রেতা-সহ সংশ্লিষ্ট সবার ক্ষেত্রেই) সহজে তার মীমাংসা করার লক্ষ্যেই রাজ্যে চালু হয়েছে আবাসন নিয়ন্ত্রণ আইন (রেরা)। পাশাপাশি কাজ শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ রিয়েল এস্টেট অ্যাপিলেট ট্রাইবুনালও, অর্থাৎ আবাসন সংক্রান্ত ক্ষেত্রের আপিল আদালত। রেরা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বাদী বা বিবাদী, কোনও পক্ষ সন্তুষ্ট না হলে সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ওই ট্রাইবুনালে আবেদন করা যাবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই রেরার নির্দেশের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া কয়েকটি মামলার শুনানি চলছে সেখানে।
গত ২০১৬ সালে কেন্দ্র রেরা আইনটি চালু করলেও, রাজ্য গোড়ায় আলাদা আইন (হিরা) চালু করে। সেখানে সন্তুষ্ট না হলে ফ্ল্যাট-বাড়ির ক্রেতা বা বিক্রেতার তৎকালীন আপিল আদালতে (ওয়েস্ট বেঙ্গল হাউসিং ইন্ডাস্ট্রি অ্যাপেলেট ট্রাইবুনাল) যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু পরে ক্রেতা সংগঠনের মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট হিরা-কে অসাংবিধানিক আখ্যা দেয়। রেরা চালুর জন্য রাজ্য সরকার বছর দেড়েক আগে বিধি চালু করলেও, তার কর্তৃপক্ষ গঠিত হয় গত বছরের শেষের দিকে। সেই সূত্রে আগের আপিল আদালতেরও আর কোনও অস্তিত্ব থাকেনি। রেরার প্রেক্ষিতে তৈরি হয় নতুন আপিল আদালত— ওয়েস্ট বেঙ্গল রিয়েল এস্টেট অ্যাপিলেট ট্রাইবুনাল। সেটি রেরা কর্তৃপক্ষ গঠনের পর পরই চালু হয়েছিল। তবে রেরার কোনও মামলার অন্তর্বর্তী নির্দেশ বা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এবং তার পরে সেই সব নির্দেশ বা নিষ্পত্তি নিয়ে কেউ অসন্তুষ্ট হয়ে ফের আবেদন না জানানো পর্যন্ত এই আপিল আদালতে মামলা শুরু করার অবকাশ ছিল না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এই কারণেই মাস তিনেক হল কাজ করতে শুরু করেছে আপিল আদালত। প্রাক্তন অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক গৌরসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অবসরপ্রাপ্ত আইএফএস সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে তৈরি হয়েছে সেই আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ। সূত্র জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত রেরার নির্দেশের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা দায়ের হয়েছে সেখানে। এর মধ্যে একটি মামলার কয়েকটি শুনানি হওয়ার পরে আইনত সেটি আর গ্রাহ্য হয়নি ট্রাইবুনালে। পুরনো আপিল আদালতে বকেয়া থাকা মামলারও নতুন আপিল আদালতে পরবর্তী ধাপের শুনানি হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
আইনজীবী ছাড়াও কোনও পক্ষ নিজেরাই আবাসন সংক্রান্ত মামলায় নিজেদের বক্তব্য পেশ করতে পারে। অনলাইন ব্যবস্থা এখনও তৈরি না হওয়ায়, আপাতত আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে সোম থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা দেড়টার মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।