ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
ঋণনীতি বৈঠকে বসে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছিলেন, খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার অগ্রহণযোগ্য এবং অস্বস্তিকর ভাবে বেশি। এই যুক্তিতেই তিনি সুদের হার (রেপো রেট, যে সুদে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয় আরবিআই) ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। শুক্রবার ওই বৈঠকের কার্যবিবরণীর সারাংশ প্রকাশের পরে শক্তিকান্তের এই পর্যবেক্ষণ সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, গত ৩ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত চলা ঋণনীতি কমিটির আলোচনায় তাঁর সঙ্গে একমত ছিলেন বাকি সমস্ত সদস্যই। বৈঠক শেষে মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানার উপায় হিসাবে ৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হয়। যা রেপোকে নিয়ে যায় ৫.৪০ শতাংশে। শক্তিকান্ত এটাও বলেছিলেন, তাঁদের এই পদক্ষেপ ধাপে ধাপে জারি থাকবে মূল্যবৃদ্ধি ও আর্থিক কর্মকাণ্ডের পরিস্থিতি অনুযায়ী।
সম্প্রতি আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজ়ার্ভের জুলাইয়ের বৈঠকের কার্যবিবরণীতেও সুদের হার আরও বৃদ্ধির ইঙ্গিত উঠে এসেছে। যত দিন না মূল্যবৃদ্ধির চড়া হারে রাশ টানা সম্ভব হচ্ছে, তত দিন সুদ বাড়িয়ে যাওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলছে তারাও। যার অর্থ, ঋণের খরচ আরও বাড়তে চলেছে বিশ্বের সর্বত্রই। যা চাহিদাকে আরও টেনে নামাবে। ফলে আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। ইতিমধ্যেই আমেরিকায় টানা দু’টি ত্রৈমাসিকে জিডিপি কমেছে। তারা মন্দার মুখে পড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা।
তবে এ দিন অর্থনীতি সংক্রান্ত যে মাসিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক, তা খানিকটা আশ্বস্ত করেছে দেশবাসীকে। সেখানে মন্ত্রকের দাবি, মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমছে। আর্থিক ক্ষেত্রগুলি স্থিতিশীল। পরিষেবা ক্ষেত্রের পুনরুজ্জীবন ঘটেছে এবং তা এখন আরও উন্নত হওয়া পথে। তবে ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি এখনও যথেষ্ট বেশি বলে মনে করছে তারা। সেই সঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্বের উন্নত অর্থনীতিগুলিতে মন্দার আশঙ্কা বহাল থাকা নিয়েও।