অর্থনীতির হাল ফেরানোর দায়ভার কেন্দ্রের উপরেই ঠেলল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
আচমকাই স্থগিত হয়ে গিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির বৈঠক। সূত্রের খবর ছিল, মেয়াদ ফুরোনোয় তিন স্বাধীন সদস্যের পদ ফাঁকা থাকাই এর কারণ। যার জেরে তৈরি হয়েছিল বিভিন্ন জল্পনা। সোমবার ওই পদগুলিতে নিয়োগ চূড়ান্ত হয়েছে। তার পরে মঙ্গলবারই শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানাল, বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনের ঋণনীতি বৈঠক। চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। সে দিন দুপুরে জানা যাবে সুদ-সহ বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত। ঋণনীতি কমিটিতে যুক্ত হওয়ার পরে অর্থনীতিবিদ অসীমা গয়াল এ দিনই প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটিতে ছ’জন সদস্য। গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, কেন্দ্রের প্রতিনিধি এবং তিন স্বাধীন সদস্য। এই তিন সদস্যের পদই ফাঁকা ছিল। অথচ অন্তত চার জন উপস্থিত না-থাকলে কমিটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এই অবস্থায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ঋণনীতি কমিটির বৈঠক শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, ঠিক আগের দিন নজিরবিহীন ভাবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানায় বৈঠক স্থগিত রাখার কথা। তার পরেই বিরোধীদের দিক থেকে ধেয়ে আসে সমালোচনা। বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখে অনেকেই তোপ দাগেন, ওই তিন পদ তো বেশ কিছু দিন ধরেই ফাঁকা। বৈঠকের আগে তা পূরণ করে নেওয়া গেল না? ওয়াকিবহাল মহলের অনেকে বলেন, করোনার জেরে অর্থনীতি যখন নড়বড়ে, শিল্প-সহ সকলে যখন ঋণনীতি বৈঠকের দিকে তাকিয়ে, তখন তা স্থগিত করে দেওয়া প্রত্যাশিত নয়। ঋণনীতি কমিটির মতো এত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিয়োগ নিয়ে কেন আগেই সিদ্ধান্ত নেয়নি মোদী সরকার!
অনেকের প্রশ্ন, চারদিক থেকে সমালোচনা ধেয়ে আসাতেই কি সোমবার তড়িঘড়ি অর্থনীতিবিদ অসীমা গয়াল, জয়ন্ত বর্মা এবং শশাঙ্ক ভিডেকে স্বাধীন সদস্য পদে নিয়োগ করে কেন্দ্র? আর তার পরেই বৈঠকের দিনক্ষণ ঘোষণা।
পরের বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত খুচরো মূল্যবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৪ শতাংশে (২% কম থেকে বেশি পর্যন্ত) বেঁধেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে তার হার ৬ শতাংশের বেশি হওয়ায় অগস্টের বৈঠকে সুদ অপরিবর্তিত রেখেছিল ঋণনীতি কমিটি। যদিও গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছিলেন, সুদ কমার পথ খোলাই রাখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের বক্তব্য, মূল্যবৃদ্ধি এখনও তেমন মাথা নামায়নি। ফলে শিল্পমহল যে প্রত্যাশাই করুক, এই বৈঠকেও সুদ কমার সম্ভাবনা কম।