তিন বছর আগে ৮ নভেম্বরের রাতে যখন নোটবন্দির ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দাবি ছিল, কালো টাকা ও জাল নোট রোখাই এর অন্যতম লক্ষ্য। সেই ঘোষণার অঙ্গ হিসেবে এক ধাক্কায় বাতিল হয়েছিল ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট। আর বাজারে এসেছিল ২০০০ টাকা এবং নতুন ৫০০ টাকার নোট। তখনই প্রশ্ন উঠেছিল যে, সরকার যেখানে কালো টাকা নগদে লুকিয়ে রাখার প্রবণতায় কোপ মারতে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেখানে নতুন করে ২০০০ টাকার নোট কেন? সম্প্রতি রাজ্যসভায় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন নিজেই জানিয়েছেন যে, বেআইনি ভাবে টাকা রাখার অভিযোগে আয়কর দফতর গত দু’অর্থবর্ষে মোট যে পরিমাণ অর্থ বাজেয়াপ্ত করেছে, তার সিংহভাগই ২০০০ টাকার নোট। চলতি অর্থবর্ষেও বাজেয়াপ্ত নোটের ৪৩% ওই বড় নোটই।
রাজ্যসভায় সীতারামনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত দুই অর্থবর্ষ এবং চলতি অর্থবর্ষের প্রথম প্রায় আট মাসে আয়কর দফতর বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়ে বেআইনি ভাবে রাখা মোট ৫ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে। এর মধ্যে ২০১৭-১৮ সালে যত টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তার ৬৭.৯১ শতাংশ টাকাই ২০০০ টাকার নোট। একই ভাবে ২০১৮-১৯ এবং চলতি অর্থবর্ষে বাজেয়াপ্ত করা টাকার মধ্যে যথাক্রমে ৬৫.৯৩ শতাংশ এবং ৪৩.২২ শতাংশই ২,০০০ টাকার নোটে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর অনুযায়ী, কালো টাকা মজুত করার ক্ষেত্রে তার মালিকদের হাতে আগের থেকে সহজ রাস্তার ব্যবস্থা করেছে ২০০০ টাকার নোট। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এক অফিসার বলেন, এর কারণ ২০০০ টাকার নোট চালু হওয়ায় আগের থেকে তুলনামূলক ভাবে অনেক কম সংখ্যক কারেন্সি নোটের মাধ্যমে অনেক বেশি অঙ্কের কালো টাকা মজুত রাখতে সুবিধা হচ্ছে তার মালিকদের। অবস্থা সামাল দিতে ইতিমধ্যেই ২০০০ টাকার নোট ছাপা বন্ধ করে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।