মূল্যবৃদ্ধির হার ক্রমশ মাথাচাড়া দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এ বার ঋণনীতি কাঠামো (মনিটরি পলিসি ফ্রেমওয়ার্ক) খতিয়ে দেখছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেন, ঋণনীতি স্থির করতে এই কাঠামো কতটা কাজে লাগছে, তা দেখা হচ্ছে। জুনে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র-সহ সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন তাঁরা। এ দিকে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের একার পক্ষে মূল্যবৃদ্ধিকে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখা সম্ভব নয় বলে মত প্রাক্তন গভর্নর সি রঙ্গরাজনের। তিনি বলেন, বাজারে জোগানোর ধাক্কা সামলানোর দায়িত্ব সরকারের।
২০১৬ সালের অক্টোবরে প্রথম বৈঠকে ঋণনীতি কমিটিকে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশে বেঁধে রাখার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। নিয়ম অনুসারে, তা বেশি হলে ৬%, আর কম হলে ২% হতে পারে। শক্তিকান্ত বলেন, গত প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে এই কাঠামো কাজ করছে। তা কতটা সফল, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শীর্ষ ব্যাঙ্ক অভ্যন্তরীণ কথাবার্তা শুরু করেছে। গভর্নরের কথায়, চলতি বছরের মাঝামাঝি জুন নাগাদ বিষয়টি নিয়ে বিশ্লেষক, বিশেষজ্ঞ ও অন্যান্য পক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন তাঁরা। এই কাঠামো আইনের আওতায় পড়ে। ফলে কেন্দ্রের সঙ্গেও কথা বলা হবে বলে জানান তিনি।
জানুয়ারিতে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ছাড়িয়েছে ৭.৫%। সার্বিক মূল্যবৃদ্ধিও পেরিয়েছে ৩%। এক লেখায় রঙ্গরাজনের মত, মূল্যবৃদ্ধিকে সীমার মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা শীর্ষ ব্যাঙ্ককে কাজ করার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা দেয়। এতে তা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়ালে, মূল্যবৃদ্ধিকে আওতায় ফিরিয়ে আনার দিকে মন দিতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। আর তা সীমার মধ্যে থাকলে অর্থনীতির অন্যান্য বিষয়গুলি নিয়ে ভাবতে পারে তারা। কিন্তু শীর্ষ ব্যাঙ্কের একটা অসুবিধা হল, অনেক সময়ে কী কারণে মূল্যবৃদ্ধি লক্ষ্য ছাড়াচ্ছে, তা না-দেখেই ঋণনীতিতে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সে ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধিকে আটকাতে বাজারে জোগানের ধারা বজায় রাখা জরুরি। আর তা সরকারেরই দায়িত্ব বলে মত প্রাক্তন গভর্নরের।