—প্রতীকী ছবি।
এ বার থেকে কোনও প্রকল্প নির্মাণের জন্য ঋণ দিলে, সেই খাতে ব্যাঙ্কগুলিকে আগের থেকে কয়েক গুণ বেশি আর্থিক সংস্থান করতে হবে বলে প্রস্তাব দিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। যা কার্যকর হলে ব্যাঙ্কের মুনাফা কমার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যে কারণে মঙ্গলবার পড়ে গিয়েছে বেশির ভাগ ব্যাঙ্কের শেয়ার দর। আর তা-ই মূলত টেনে নামিয়েছে সূচককে। সেনসেক্স ৩৮৩.৬৯ পয়েন্ট পড়ে হয়েছে ৭৩,৫১১.৮৫। নিফ্টি হয়েছে ২২,৩০২.৫০। পতন ১৪০.২০।
আরবিআই সম্প্রতি প্রস্তাব দিয়েছে, বিদ্যুৎ, ইস্পাত-সহ যে কোনও প্রকল্প নির্মাণে ধার দিলেই সেই খাতে আর্থিক সংস্থান বাড়াক ব্যাঙ্কগুলি। এখন তা মোট ঋণের ০.৪%। বাড়িয়ে করা হোক ১ থেকে ৫ শতাংশ। তবে প্রকল্প রূপায়ণ এবং তার থেকে আয় শুরু হওয়ার নিরিখে পর্যায়ক্রমে কমবে সংস্থান। প্রকল্প তৈরির সময় তা হবে ৫%। যখন সেটি চালু হবে তখন ২.৫%। আর প্রকল্প থেকে আয় শুরু হলে আর্থিক সংস্থান হবে ১%। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ব্যাঙ্কগুলির স্বার্থেই এই প্রস্তাব রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের। যাতে প্রকল্প থমকে ঋণের টাকা আটকে গেলে তাদের আর্থিক স্বাস্থ্য খারাপ না হয়।
বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর দাবি, এই প্রস্তাবে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে লগ্নিকারীদের মধ্যে। কারণ, ব্যাঙ্ক মোট মুনাফা থেকে আর্থিক সংস্থানে বরাদ্দ টাকা বাদ দিয়ে নিট মুনাফার অঙ্ক কষে। তাই সংস্থান বাড়লে নিট মুনাফা কমতে পারে। গত দু’দিন ধরে যে কারণে ব্যাঙ্কের শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়েছে। শুধু মঙ্গলবারই বিএসই-তে ব্যাঙ্কের শেয়ার সূচক ৬০০ পয়েন্টেরও বেশি পড়েছে। যা বাজারকে টেনে নামিয়েছে। বিদেশি লগ্নিকারীরা ৩৬৬৮.৮৪ কোটি টাকার শেয়ার বেচেছে।
ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেন জানান, ব্যাঙ্কগুলি স্থায়ী আমানত হিসাবে জমা টাকা প্রকল্প তৈরিতে ধার দেয় দীর্ঘ মেয়াদে। কিন্তু অনেক সময়েই আমানতের মেয়াদের থেকে ঋণের মেয়াদ বেশি হয়। ফলে ঋণের টাকা ফেরত পাওয়া এবং আমানতের টাকা মেটানোর সময়ের মধ্যে বড় ফারাক থাকে। ওই ঝুঁকি সামলানো উদ্দেশ্য হতে পারে। মার্কারি ক্যাপিটালের ব্যাঙ্কিং বিশ্লেষক সুরেশ গণপতির দাবি, এতে ব্যাঙ্কগুলি প্রকল্প নির্মাণের ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়া কমাতে পারে।