জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের রিপোর্টে জিডিপি বৃদ্ধির হার শ্লথ হতে পারে। —প্রতীকী চিত্র।
গত অর্থবর্ষের প্রথম তিনটি ত্রৈমাসিকে দেশের জিডিপি বেড়েছিল ৮ শতাংশের বেশি। শেষটিতে ছিল ৮ শতাংশের কাছাকাছি। তার পরেই চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে অর্থাৎ গত এপ্রিল-মে-জুনে বৃদ্ধির হার নেমে আসে ৬.৭ শতাংশে। বুধবার প্রকাশিত রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নিবন্ধে আশঙ্কা, জুলাই-অগস্ট-সেপ্টেম্বরে তা আরও শ্লথ হতে পারে। এই দিনই সমীক্ষা রিপোর্টে মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রার পূর্বাভাস, ওই তিন মাসে বৃদ্ধির হার নামতে পারে ৬.৫ শতাংশে। আশঙ্কা যে অমূলক নয়, সেটা স্পষ্ট করেছেন কেন্দ্রীয় আর্থিক বিষয়ক সচিব অজয় শেঠ। মেনে নিয়েছেন, চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে তার আগের দুই ত্রৈমাসিক কিংবা আগের বছরের জায়গায় নেই কিছু পণ্য এবং পরিষেবার হাল।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নিবন্ধের লেখক প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি গভর্নর মাইকেল দেবব্রত পাত্র এবং কেন্দ্রীয় সচিব অবশ্য অর্থনীতি নিয়ে সামগ্রিক ভাবে আশাবাদী। দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার বার্তাও দিয়েছেন। শেঠের বক্তব্য, খাদ্যপণ্য বাদে মূল্যবৃদ্ধি আর ভারতকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে না। বৃদ্ধির হারও ৬.৫-৭ শতাংশের কম হবে বলে মনে হয় না। অন্য দিকে লগ্নিতে খরার কথা বললেও কৃষি, চাহিদা, মাঝারি মেয়াদে অর্থনীতির পোক্ত জমি নিয়ে ভরসা দিয়েছে আরবিআই। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, অর্থনীতির খানিকটা ঝিমিয়ে পড়ার ইঙ্গিত মিলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। বাজারে খাদ্যপণ্যের আগুন দাম। পরিসংখ্যানই দেখিয়েছে উৎসবের বাজারেও বিক্রিবাটা ফুলেফেঁপে ওঠেনি। ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বহাল। সব মিলিয়ে তাল কাটার চিহ্ন স্পষ্ট। ইক্রাও গোটা অর্থবর্ষের বৃদ্ধির পূর্বাভাসকে কেন্দ্র বা রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের মতো ৭.২% পর্যন্ত তোলেনি। থামিয়ে দিয়েছে ৭ শতাংশে। সম্প্রতি বিভিন্ন আর্থিক উপদেষ্টার বৃদ্ধি নিয়ে সংশোধিত সমীক্ষায় যে ঝোঁক চোখে পড়েছে।
আরবিআইয়ের নিবন্ধে আশ্বাস, জুলাই-সেপ্টেম্বরের সব ঝুঁকি এবং উদ্বেগকে পিছনে ফেলে নতুন করে মাথা তুলছে আর্থিক কর্মকাণ্ড। দেশের অভ্যন্তরের চাহিদা বাড়ছে। তবে ইক্রার দাবি, সরকারি ব্যয় এবং খরিফ শস্য বপণ বাড়লেও, খনন এবং বিদ্যুতের মতো ক্ষেত্রে উৎপাদন কমার আশঙ্কা। চিন্তার কারণ খুচরো বাজারে ক্রেতার আনাগোনা এবং রফতানি কমাও। সঙ্গে যোগ হয়েছে ব্যক্তিগত ঋণ বৃদ্ধির হার ধাক্কা খাওয়া, ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা এবং পণ্যের চড়া দামের ঝুঁকি। ভাল বর্ষা, পোক্ত মজুত এবং উন্নত খরিফ উৎপাদন ছবিটা বদলাতে পারে কি না, সেটাই দেখার।