শক্তিকান্ত দাস। —ফাইল চিত্র।
এই সপ্তাহে আমেরিকা সুদ কমালে ভারতও সেই পথে দ্রুত হাঁটতে পারে বলে জল্পনা দেশ জুড়ে। সোমবার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানালেন, সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে দীর্ঘমেয়াদে মূল্যবৃদ্ধিকে মাথা নামাতে দেখার পরে। কোনও এক মাসের ভিত্তিতে নয়। অর্থাৎ প্রতি মাসে তার হারকে কমতে হবে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এতেই স্পষ্ট সুদ ছাঁটাই নিয়ে আরবিআই তাড়াহুড়ো করবে না। বরং মূল্যবৃদ্ধির ফের মাথাচাড়া দেওয়ার আশঙ্কা নেই, এটা নিশ্চিত হয়ে তার পরে সিদ্ধান্ত নেবে। ফলে সুদের খরচে সুরাহার জন্য শিল্প এবং ঋণগ্রহীতাদের যে আরও খানিকটা সময় অপেক্ষা করতে হবে, কার্যত সেটাই স্পষ্ট হল।
গত জুলাইয়ের পরে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি অগস্টেও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া ৪% লক্ষ্যের নীচে। তবে আশঙ্কা কাটেনি নানা কারণে। বিশেষজ্ঞদের মতে— এক, সরকারি পরিসংখ্যানেই দেখা গিয়েছে ১০ শতাংশের বেশি হারে বেড়েছে আনাজ এবং ডাল। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এখনও চড়া, ৫.৬৬%। দুই, জুলাইয়ের ৩.৬% থেকে অগস্টের ৩.৬৫% মূল্যবৃদ্ধির হার সামান্য হলেও বেশি। তিন, খাতায়-কলমে এই হার যতটা কম দেখাচ্ছে বাজারে গিয়ে তা অনুভব করা যাচ্ছে না। যার কারণ আগের বছরের ৬.৮৩ শতাংশের উঁচু ভিতের নিরিখে এ বারের হিসেব কম দেখানো। উঁচু ভিতের সুবিধা কমলে তা ফের ৫ শতাংশের কাছে পৌঁছতে পারে। চার, খাদ্যপণ্যের দাম কমিয়ে মূল্যবৃদ্ধিকে নামাতে কৃষির ফলন ভাল হওয়ার বাধ্যবাধকতা।
এমন অবস্থায় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক ৭-৯ অক্টোবরের ঋণনীতি বৈঠকে সুদ কমাবে কি না, তা নিয়ে চর্চা বহাল। আমেরিকা সুদ কমালে এ দেশেও সেই চাপ বাড়বে বলে মনে করছে একাংশ। তবে এ দিন শক্তিকান্ত এ প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি। শুধু বলেছেন, প্রত্যেক মাসে তার গতিতেই তাঁরা চোখ রাখবেন। হার ফের বাড়ছে, নাকি ক্রমশ কমছে। ভবিষ্যতের কক্ষপথেও নজরদারি চলবে। তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হবে। তাঁর কথায়, ‘‘...মূল্যবৃদ্ধির হার এই মুহূর্তে কত সেটা বড় বিষয় নয়, দেখতে হবে পরের ছ’মাসে, এক বছর কত, তার সম্ভাব্য গতিবিধি। কাজেই কিছুটা পিছিয়ে গিয়ে আরও সতর্ক ভাবে মূল্যবৃদ্ধি এবং আর্থিক বৃদ্ধির ভবিষ্যতে চোখ রাখা এবং তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া পক্ষপাতী আমরা।’’