—ফাইল চিত্র।
বছর ছয়েক আগে নোট বাতিলের পরেই দেশবাসীকে আরও বেশি করে ডিজিটাল লেনদেন করতে বলছিল মোদী সরকার। সেই সূত্রে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সহজে টাকা দেওয়া-নেওয়ার জন্য দেশে চালু হয় ‘ইউপিআই’ (ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেস) পরিষেবা। কিন্তু স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট লাগে তাতে। ফলে যাঁদের ২জি প্রযুক্তি নির্ভর সাধারণ (ফিচার) মোবাইল, তাঁরা চাইলেও পরিষেবাটি নিতে পারেন না। অথচ এমন গ্রাহকের সংখ্যা ভারতে প্রায় ৪০ কোটি।
ডিজিটাল লেনদেনের বিস্তার ঘটাতে এ বার সেই ফোনেও ইউপিআই (ইউপিআই ১২৩পে) পরিষেবায় আর্থিক লেনদেনের সুযোগ আনল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। এমনকি ইন্টারনেট না-থাকলেও তা ব্যবহার করা যাবে।
মঙ্গলবার ফিচার ফোনের ইউপিআই পরিষেবাটি উদ্বোধন করেন আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। তাঁর আশা, অদূর ভবিষ্যতে সার্বিক ভাবে ইউপিআইয়ে বার্ষিক লেনদেন ১০০ লক্ষ কোটি টাকা ছোঁবে।
ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনের বিভিন্ন পদ্ধতি চালু করতে শীর্ষ ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্কিং শিল্প মহল মিলে গড়েছিল ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এনপিসিআই) সংস্থাটি। ইউপিআই-এর আগে ফিচার ফোন মারফত ডিজিটাল লেনদেনের জন্য একটি বিশেষ প্রযুক্তি (ইউএসএসডি) তৈরি করেছিল তারা। কিন্তু বহু গ্রাহকের অভিযোগ, সেই ব্যবস্থাটি জটিল। সব টেলিকম সংস্থা তা দিতও না। এ দিন একই কথা বলেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর টি রবি। শক্তিকান্তের দাবি, ‘‘এখন ইউপিআই শুধুমাত্র স্মার্টফোনে পাওয়া যায় বলে নিম্নবিত্ত মানুষ তার সুবিধা নিতে পারেন না। সেই সব মানুষের কাছেও পরিষেবাটি পৌঁছে দেবে নতুন ব্যবস্থা। যার হাত ধরে সকলের কাছে আর্থিক পরিষেবা পৌঁছনো সহজতর হবে।’’
আরবিআই এবং এনপিসিআই সূত্রের খবর, ইউপিআই দিয়ে লেনদেন করতে গ্রাহককে তাঁর সাধারণ মোবাইল ফোনটি কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। তারপরে সংশ্লিষ্ট পদ্ধতি অনুযায়ী ডেবিট কার্ডের কিছু তথ্য দিয়ে লেনদেনের জন্য ‘পিন’ ঠিক করতে হবে। নির্দিষ্ট ‘আইভিআর’ নম্বরে ফোন করে কোন পরিষেবা (অন্যকে টাকা পাঠানো, রান্নার গ্যাসের দাম মেটানো, দোকানের টাকা মেটানো, মোবাইল রিচার্জ ইত্যাদি) ব্যবহার করতে চান, তা বেছে নিতে হবে এর পরে। যেমন, টাকা পাঠাতে হলে সেটি বেছে নিয়ে যাঁকে পাঠাতে চান, তাঁর ফোন নম্বর এবং টাকার অঙ্ক লিখে পিন-এর মাধ্যমে লেনদেন সম্পূর্ণ করা যাবে। কিছু ফিচার ফোনে এ ধরনের অ্যাপ থাকতে পারে। ‘মিসড্ কল’ দিয়েও এই পরিষেবা মিলবে।
শক্তিকান্ত জানিয়েছেন, ২০২০-২১ সালে ইউপিআই মারফত ৪১ লক্ষ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। এই অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত সেই অঙ্ক ৭৬ লক্ষ কোটি টাকা। অচিরে লেনদেন ১০০ লক্ষ কোটি টাকা ছোঁবে বলে আশা তাঁর। এ দিন ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে দিবারাত্র হেল্পলাইন নম্বর ও পোর্টালের উদ্বোধনও করেন তিনি।