অর্থনীতি নিয়ে সদর্থক বার্তা দিয়ে চলতি অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়িয়ে ৭% করা হল ঠিকই। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আশার কথা শোনাতে পারল না রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। উল্টে শুক্রবার ঋণনীতিতে গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের বার্তা, কয়েক মাস ধরে মূল্যবৃদ্ধির হার মাথা নামানো মানেই দাম পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তা নয়। বরং খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির জেরে নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মূল্যবৃদ্ধি ফের চড়তে পারে। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবর্ষে তা হতে পারে ৫.৪%। যে কারণে সুদ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি তাঁরা। রেপো রেট (যে সুদে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয় আরবিআই) ধরে রাখা হয়েছে ৬.৫ শতাংশেই। তাঁর কথায়, আগামী দিনেও দর নিয়ন্ত্রণে নজর থাকবে।
গত বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে মাত্রা ছাড়ানো মূল্যবৃদ্ধি এখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। অক্টোবরে খুচরো বাজারে তা দাঁড়িয়েছে ৪.৮৭%। আর পাইকারিতে দীর্ঘ দিনই মূল্যবৃদ্ধির হার শূন্যের নীচে। ইতিমধ্যে খাদ্যপণ্য মূলত পেঁয়াজ-চাল-ডাল-গমের চড়া দাম যুঝতে বেশ কিছু পদক্ষেপও করেছে মোদী সরকার। কিন্তু এখনও বহু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম রয়েছে সাধারণের সাধ্যের বাইরে।
তবে এর মধ্যেও আশার কথা শুনিয়ে ঋণনীতি বলছে, অক্টোবরে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্য বাদে অন্যান্য জিনিসের মূল্যবৃদ্ধিও (কোর ইনফ্লেশন) মাথা নামিয়েছে। বিশ্ব বাজারে কমেছে চাল বাদে অন্য খাদ্যপণ্যের দাম। ভারত ভোজ্য তেলের মতো যে সমস্ত পণ্য বেশি আমদানি করে, তারও দর কমেছে।
শক্তিকান্তের অবশ্য মত, আগামী দিনেও আনাজের মতো খাদ্যপণ্যের দামে অনিশ্চয়তা বহাল থাকবে। যা ঠেলে তুলতে পারে খুচরো মূল্যবৃদ্ধিকে। চলতি রবি মরসুমে গম, মশলা এবং ডালের মতো পণ্যের উৎপাদনে কড়া নজর রাখা হবে। ঋণনীতি এমন ভাবে স্থির করা হবে যাতে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই সুদ কমানোর সম্ভাবনা এখনই নেই। বরং গভর্নরের বার্তা, ঋণনীতি কমিটির প্রথম লক্ষ্য হল জিনিসের দর বৃদ্ধির হারকে ৪ শতাংশে নামানো।
তবে এর মধ্যে বৃদ্ধি নিয়ে আশার কথাই শুনিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। তাদের বক্তব্য, দেশের অর্থনীতিতে বিদেশি লগ্নিকারী ও শিল্প মহলের আস্থা এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতে কর্মকাণ্ড বাড়ায় অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসে জিডিপি সমস্ত পূর্বাভাসকেই ছাপিয়েছে। বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি বিচার করে তাই ২০২৩-২৪ সালে ৭% বৃদ্ধির পূর্বাভাস করা হয়েছে। ঋণনীতি ঘোষণার পরে সেনসেক্স ৩০৩.৯১ পয়েন্ট উঠে ৬৯,৮২৫.৬০ অঙ্কে পৌঁছেছে। লেনদেনের মাঝে ২১ হাজার পয়েন্ট ছোঁয় নিফ্টি। দুই সূচকই পৌঁছেছে নতুন শিখরে।