একচেটিয়া বাজার দখলের চেষ্টাকে বরদাস্ত করা তো দূর, বরং সেখানে প্রতিযোগিতায় সমস্ত সংস্থার সমান সুবিধা পাওয়া নিশ্চিত করতে সরকার সজাগ থাকবে বলে টেলিকম শিল্পকে আশ্বাস দিলেন টেলিকমমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। একই সঙ্গে তুললেন জিএসটি কমানো এবং করে আটকে থাকা টাকা দ্রুত শিল্পের হাতে ফেরানোর কথা। তবে উল্টো দিকে শিল্পের কাছেও তাঁর আর্জি, দেশের যে ৪৩ হাজার গ্রামে এখনও টেলি সংযোগ পৌঁছয়নি, সেখানে তা দ্রুত পৌঁছনোর বন্দোবস্ত হোক। আর ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির স্বপ্নকে সামনে রেখে টেলি শিল্পের পাখির চোখ হোক ৫-জি পরিষেবাই।
স্পেকট্রামের চড়া দাম আর বিপুল লাইসেন্স ফি মেটাতে গিয়ে প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকার দেনার বোঝা চেপে রয়েছে টেলি সংস্থাগুলির উপরে। তার উপরে তাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার জোগাড় মাসুলের গলাকাটা প্রতিযোগিতায়। মুকেশ অম্বানীর সংস্থা জিয়ো বাজারে পা রাখার পর থেকে যা আরও অনেক বেশি তীব্র হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি। তাদের মতে, এই সমস্ত কারণেই মুনাফার মুখ দেখা কঠিন হচ্ছে অধিকাংশ টেলি সংস্থার পক্ষে। কাজ খোয়াচ্ছেন অনেকে।
টেলি সংস্থাগুলি বার বার অভিযোগ তুলেছে, মাসুল যুদ্ধে বাকি সংস্থাকে কোণঠাসা করে বাজারে একচেটিয়া দখল কায়েম করতে জলের দরে পরিষেবা দিচ্ছে জিয়ো। তার টাকা আসছে মুকেশ অম্বানীর অন্যান্য ব্যবসা থেকে।
শিল্পের মাথাব্যথা
মাসুলের গলাকাটা প্রতিযোগিতায় আর্থিক স্বাস্থ্য বেহাল অধিকাংশ সংস্থার।
ঘাড়ে বিপুল দেনার বোঝা (সব মিলিয়ে প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকা)। কঠিন হচ্ছে মুনাফার মুখ দেখাও।
লাইসেন্স ফি, স্পেকট্রাম চার্জ না কমলে ব্যবসা করা কঠিন।
কেন্দ্রের বক্তব্য
একচেটিয়া বাজার দখলের চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না।
জিএসটি ১৮% থেকে কমিয়ে ১২% করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে পরিষদকে।
চেষ্টা হচ্ছে কাঁচামাল কিনতে গোনা করের টাকা দ্রুত ফেরত দেওয়ারও।
দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তেও পরিষেবা পৌঁছনো ও সর্বত্র তার মান উন্নত করাকে পাখির চোখ করুক টেলি শিল্প। জোর দিক ৫জি-তে।
জিয়ো সেই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে। তবুও মন্ত্রীর আশ্বাসকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। অবশ্য শিল্পকে আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি পরিষেবার মান উন্নত করতে বলেছেন প্রসাদ। বলেছেন, দেশকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হয়ে উঠতে হলে, তার ২৫% আসতে হবে এই শিল্প থেকেই। ভারতকে টেলিকম যন্ত্রাংশ তৈরির হাব হিসেবে গড়ে তোলারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।