রঘুরাম রাজন, প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর।
অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, কিন্তু সকলের জন্য নয়— সম্প্রতি এই দাবি করেছিলেন অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। একই ইঙ্গিত দিয়ে রবিবার রঘুরাম রাজনের দাবি, অর্থনীতিতে কিছু উজ্জ্বল বিন্দু আছে এবং অনেকগুলি অত্যন্ত গাঢ় অন্ধকারময় দাগ। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নরের বার্তা, এখন কেন্দ্রের লক্ষ্য হওয়া উচিত খুব ‘সতর্ক ভাবে’’ খরচ করা। যাতে রাজকোষ ঘাটতি মাত্রা না-ছাড়ায়। সে ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে সঙ্কটে থাকা যে অংশকে সাহায্য করা সব থেকে প্রয়োজন, শুধু তাদের জন্য যেন খরচে মন দেয় কেন্দ্র।
আজ এক সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রকে দেশে বৈষম্যমূলক উন্নতি নিয়ে সতর্ক করেছেন রাজন। উদ্বেগ প্রকাশ করে ই-মেল মারফত তাঁর বার্তা, এটা ঠিক যে বড়, নতুন (বিশেষত ১০০ কোটি ডলারের) ও আর্থিক সংস্থার একাংশের উন্নত স্বাস্থ্য এবং তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের ফুলেফেঁপে ওঠা অর্থনীতির উজ্জ্বল বিন্দু। কিন্তু অত্যন্ত গভীর ক্ষত তৈরি করেছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের তলানি ছোঁয়া ক্রয় ক্ষমতা, ছোট-মাঝারি শিল্পের আর্থিক দুরবস্থা, ঋণ বৃদ্ধির ঝিমিয়ে থাকা হার এবং চড়া বেকারত্ব। তাই কেনাকাটাও মন্থর গতিতে বাড়ছে। স্কুলে যেতে না-পারা বাচ্চাদের মনও অন্ধকারময় ছবির আর এক দিক বলে মনে করেন
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে রাজনের পরামর্শ, যে ভাবে হোক অতিমারির কবল থেকে ইংরেজির ‘K’ আকারের মতো অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন এবং মাঝারি মেয়াদে বৃদ্ধির হারের ধাক্কা খাওয়া আটকাতে হবে। কারণ, এই ভাবে ঘুরে দাঁড়ানো সাধারণত সমাজে সকলের এক ভাবে উন্নতি না-হওয়ার প্রতিফলন। যেখানে এমন আর্থিক পরিস্থিতি তৈরি হয়, যার মধ্যে দাঁড়িয়ে প্রযুক্তি এবং বড় সংস্থাগুলি অনেক দ্রুত চাঙ্গা হয় ছোট সংস্থাগুলির চেয়ে। অথচ করোনায় সব থেকে ক্ষতি হয়েছে ছোটদেরই। রাজনের মতে, চিকিৎসা ও আর্থিক কর্মকাণ্ডকে বাধার মুখে ফেলেছে ওমিক্রন। তাই কেন্দ্রকে সাবধানে ব্যয় করতে ও বাজেটে ৫-১০ বছরের রূপরেখা নিয়ে এগোতে দেখলে খুশি হবেন।