ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই
পাঁচ দেশের (ভারত, চিন, ব্রাজিল, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা) ব্রিকস মঞ্চে ফের পাঁচ বছরে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হয়ে ওঠার স্বপ্ন ফেরি করলেন নরেন্দ্র মোদী। ডাক দিলেন, বাণিজ্য বাড়াতে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য স্থির করার।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের প্রশ্ন, ভারতের বৃদ্ধি নিয়ে যে ইঙ্গিত মিলছে, তাতে ২০২৪ সালের মধ্যে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি কী ভাবে হওয়া সম্ভব, তা স্পষ্ট নয়। এ ছাড়া, চিনের সঙ্গে বাণিজ্যে ভারত টক্কর দিতে কতটা তৈরি, প্রশ্ন থাকছে তা নিয়েও। বিশেষত যেখানে মূলত সস্তার চিনা পণ্যে বাজার ছেয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ১৬ দেশের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আরসিইপি থেকে সরে এসেছে দিল্লি।
২০১৮ সালে অর্থনীতি ছিল ২.৬ লক্ষ কোটি ডলারের। তাকেই ৫ লক্ষ কোটি ডলারে নেওয়ার পণ করেছে কেন্দ্র। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের কটাক্ষ ছিল, চলতি বছরের দামের ভিত্তিতে হিসেব করা বৃদ্ধি ১১-১২ শতাংশের আশেপাশে থাকলে ওই লক্ষ্য ছোঁয়া সম্ভব। এর জন্য সরকারের কেরামতি লাগে না। কিন্তু সম্প্রতি গোত্তা খেয়ে ৫ শতাংশে নেমেছে প্রথম ত্রৈমাসিকের বৃদ্ধির হার। কিছু পূর্বাভাস বলছে, ভবিষ্যতে তা আরও নিম্নমুখী হতে পারে। ফলে সরকার কী ভাবে ওই ‘পাঁচ লাখি লক্ষ্য’ ছোঁবে, প্রশ্ন তা নিয়ে।
বড়াই তবুও?
• সেপ্টেম্বরে শিল্পোৎপাদন কমেছে ৪.৩%। আট বছরে সবচেয়ে খারাপ।
• কল-কারখানায় উৎপাদন কমেছে ৩.৯%।
• অক্টোবরে বিদ্যুতের চাহিদা কমেছে ১৩.২%। ১২ বছরে এই প্রথম।
• সেপ্টেম্বরে পরিকাঠামো ক্ষেত্র সঙ্কুচিত ৫.২%।
• গাড়ি বিক্রিতে ভাটা।
• এপ্রিল-জুনের বৃদ্ধি ৫%, ছ’বছরে সর্বনিম্ন।
• স্টেট ব্যাঙ্কের রিসার্চ পেপার বলছে, জুলাই-সেপ্টেম্বরে বৃদ্ধি নামতে পারে ৪.২ শতাংশে।
যদিও সরকারি সূত্র বলছে, সব থেকে খারাপ সময় কাটার পরে মুখ তুলবে অর্থনীতি। আর বাণিজ্যের ডাক দেওয়ার প্রসঙ্গে যুক্তি, মঞ্চ হিসেবে ব্রিকসের আর্থ-রাজনৈতিক সমীকরণ আরসিইপির থেকে আলাদা। এখানে ভারতের কথার গুরুত্ব যথেষ্ট। চিন-সহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অবাধ বাণিজ্যে শামিল হওয়ার বাধ্যবাধকতাও এই মঞ্চে নেই। তাই বাণিজ্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাড়াতে বললেও, চিনা পণ্যে বাজার ছেয়ে যাওয়ার আশঙ্কা এ ক্ষেত্রে কম বলেই মনে করে দিল্লি।