economy

পিএফে জমা হয়নি সুদ, আশঙ্কা বাড়ছে হার কমার

সরকারি সূত্রের খবর, ওই বছরের জন্য পিএফ কর্তৃপক্ষের (ইপিএফও) অছি পরিষদ ৮.৫০% সুদ দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা এখনও অনুমোদন করেনি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। কারণ, প্রায় পাঁচ কোটি সদস্যকে এই সুদ দেওয়ার সংস্থান নাকি এই মুহূর্তে তাদের নেই। ফলে সুদ আরও ছাঁটা হতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৭:০১
Share:

প্রতীকী চিত্র।

কেন্দ্র মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রায় দেড় বছর স্থগিত রেখেছে। এ বার প্রশ্ন উঠল, আমজনতার হকের টাকায় কোপ মারার এই চেষ্টা কি বহাল কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডেও (ইপিএফ)? প্রশ্নের উৎস, গত অর্থবর্ষের (২০১৯-২০) সুদ সদস্যদের পিএফ অ্যাকাউন্টে এখনও জমা না-পড়া। সরকারি সূত্রের খবর, ওই বছরের জন্য পিএফ কর্তৃপক্ষের (ইপিএফও) অছি পরিষদ ৮.৫০% সুদ দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা এখনও অনুমোদন করেনি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। কারণ, প্রায় পাঁচ কোটি সদস্যকে এই সুদ দেওয়ার সংস্থান নাকি এই মুহূর্তে তাদের নেই। ফলে সুদ আরও ছাঁটা হতে পারে।

Advertisement

করোনা যখন রুজি-রোজগারে বিপুল ধাক্কা দিয়েছে, তখন পিএফের সুদ আটকে থাকা উদ্বেগ বাড়িয়েছে মানুষের। অনেকেরই প্রশ্ন, সরকার মুখে সুরাহা দেওয়ার দাবি করলেও, টাকা না-থাকার যুক্তিতে বারবার তাঁদেরই স্বল্প পুঁজিতে হাত বাড়াচ্ছে কেন? যার জেরে বাড়ছে অনিশ্চয়তা।

গত ৫ মার্চে অছি পরিষদের বৈঠকে ২০১৯-২০ সালের সুদ আগের বছরের থেকে ১৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৮.৫০% করার সিদ্ধান্ত হয়। যা অর্থ মন্ত্রকের অনুমোদনক্রমে ঘোষণা করার কথা শ্রম মন্ত্রকের। কিন্তু এখনও তা হয়নি। ফলে অর্থবর্ষ শেষের পরে এপ্রিলের মধ্যেই সুদ জমার হিসেব সদস্যদের অ্যাকাউন্টে দেখানোর রীতিও মানা যায়নি। সরকারি সূত্র বলছে, পিএফের লগ্নি থেকে আয় কমা ও পুঁজির অভাবের যুক্তিতেই সুদের সিদ্ধান্ত ঝুলে আছে অর্থ মন্ত্রকে। সে ক্ষেত্রে ৮.৫০% দেওয়া সম্ভব হবে না বলেও ইঙ্গিত রয়েছে। ফলে আরও কমতে পারে হার। যদিও অর্থ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, চেষ্টা চলছে। এই অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে সুদ জমা পড়বে।

Advertisement

আরও পড়ুন: বেকারত্ব বাড়ছে, তবুও সরকারি পদ তৈরি বন্ধ!

সুদ বৃত্তান্ত

২০১৭-১৮

• সুদের হার: ৮.৫৫%
• সুদ খাতে খরচ: ৪৬,০০০

২০১৮-১৯

• সুদের হার: ৮.৬৫%
• সুদ খাতে খরচ: ৫৪,০০০

২০১৯-২০​

• পিএফ সদস্য: ৫ কোটি
• সুদের হার: ৮.৫০% (প্রস্তাবিত)
• সূত্রের আশঙ্কা: টাকা না-থাকার কারণ দেখিয়ে আরও কমানো হতে পারে সুদ। তাই প্রস্তাবিত হার এখনও অনুমোদন করেনি অর্থ মন্ত্রক। ফলে গত অর্থবর্ষের সুদ জমা পড়েনি।


অছি পরিষদের শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি সদস্য দিলীপ ভট্টাচার্যের তোপ, ‘‘২০১৯-২০ সালে পিএফের আয় নিয়ে সমস্যা হয়নি, যার নিরিখে সুদ দেওয়া হবে। করোনায় আয় ধাক্কা খেয়েছে মার্চের শেষে। আবার ওই সুদের খরচ কেন্দ্র দেয় না। পিএফের আয় থেকে আসে। ফলে তা ছুতো।’’ পশ্চিমবঙ্গে আঞ্চলিক পিএফ কমিশনার নবেন্দু রাই জানান, নতুন সুদ ঘোষণার আগে কেউ অবসর নিলে বা পিএফের টাকা তুললে, পুরনো হারেই (৮.৬৫%) ২০১৯-২০ সালের সুদ পাবেন।

হিসেবের নিয়ম

• পিএফ তহবিল লগ্নি
থেকে আয়ের ভিত্তিতে সুদের হার ঠিক হয়।
•প্রতি বছরই তা ঠিক করতে যাচাই হয় আয়।
• প্রথমে অছি পরিষদ হার স্থির করে।
• পরে অর্থ মন্ত্রকের অনুমোদনক্রমে সুদ
ঘোষণা করে শ্রম মন্ত্রক

৮ সেপ্টেম্বর পিএফ এগ্‌জ়িকিউটিভ কমিটির এবং ৯ তারিখে অছি পরিষদের বৈঠক। দিলীপবাবু জানান, সুদ বদলের প্রস্তাব নেই কোনওটির আলোচ্যসূচিতেই। তবে পরিষদের বৈঠক শ্রমমন্ত্রীর সভাপতিত্বে হয়। তিনি চাইলে সেই প্রস্তাব দিতে পারেন। তখন কথা হবে।

আরও পড়ুন: ফের সেই আশ্বাসবাণী, উঠছে প্রশ্ন

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement