প্রতীকী ছবি।
প্রভিডেন্ট ফান্ডের পেনশন প্রকল্পে (ইপিএস-১৯৯৫) ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সদস্য ছিলেন যাঁরা এবং যাঁদের বেতন ১৫,০০০ টাকার বেশি ছিল, তাঁদের জন্য বিশেষ সুযোগ খুলেছে, দাবি বিশ্লেষকদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি ইপিএস নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, কর্মীরা বর্ধিত হারে পেনশন পেতে চাইলে ১৫ হাজারের উপরে বাড়তি অংশের ৮.৩৩% পেনশন তহবিলে জমা দিতে পারবেন। এত দিন ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত মূল বেতনের ক্ষেত্রে সংস্থার দেওয়া ১২% পিএফের ৮.৩৩% কাটাচ্ছিলেন। প্রসঙ্গত পিএফে কর্মীও জমা দেন বেতনের ১২%। তবে বাড়তি টাকা জমা না-দিয়েই যাঁরা ২০১৪-র ১ সেপ্টেম্বরের থেকে অবসর নিয়েছেন, তাঁরা এই সুযোগ পাবেন না। বিশেষজ্ঞদের দাবি, আদালতের রায়ের হাত ধরে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেই সুযোগ নিতে রায় দানের পর থেকে চার মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সদস্য ও সংস্থাকে যৌথ ভাবে পিএফ কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানাতে হবে। এ ছাড়া পিএফ দফতর ও সংশ্লিষ্ট মহল সূত্রের দাবি, যাঁরা পিএফ অ্যাকাউন্টে জমা পুরো টাকা নিয়েই অবসর নিয়েছেন, তাঁরা এই সুযোগ পাবেন না।
অতিরিক্ত বেতনের উপরে পেনশন তহবিলে টাকা কাটানোর সুবিধা এগ্জ়েম্পটেড এস্টাব্লিসমেন্টগুলির সদস্যরাও পাবেন বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই সব সংস্থা নিজেরাই ট্রাস্ট গঠন করে পিএফ এবং পেনশন তহবিল পরিচালনা করে।
১৯৯৫ সালে ইপিএস আসে। তাতে কর্মীর অবসরের পরে ও তিনি মারা গেলেও পরিবার পেনশন পায়। নিয়োগকারীরা দেয় বেতনের ১২% টাকা থেকে ৮.৩৩% যায় পেনশন খাতে। তখন ইপিএসে নাম লেখানোর ঊর্ধ্বসীমা ছিল ৬৫০০ টাকা পর্যন্ত মূল বেতন। ২০১৪ সালের সংশোধনী এনে তা করা হয় ১৫,০০০ টাকা। বলা হয়, কর্মীর বেতন এর বেশি হলেও বাড়তি বেতনের উপর তিনি পেনশন তহবিলে টাকা জমা দিতে পারেন। তবে যেহেতু নিয়োগকারীর দেয় অংশ থেকেই পেনশন তহবিলে টাকা জমা পড়ে, তাই ওই অতিরিক্ত টাকার উপরে পেনশন তহবিলে জমা দিতে হলে কর্মী এবং নিয়োগকারী, উভয়কেই যৌথ ভাবে পিএফ কর্তৃপক্ষের কাছে ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ মাসের মধ্যে আবেদন করতে হবে। নিয়োগকারী অতিরিক্ত টাকার উপরে ৮.৩৩% দিতে না চাইলে ওই সুযোগ পাবেন না সদস্য। সূত্রের দাবি, কম সংখ্যক সদস্যই তখন অতিরিক্ত বেতন থেকে পেনশনের টাকা জমার সুযোগনিয়েছিলেন। অনেকের বিষয়টি নিয়ে ধারণাই ছিল না। তাই এ বার ওই সুযোগ নিতে ফের চার মাস সময় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সংশোধনে এটাও বলা হয়, ১৫,০০০ মূল বেতনের অতিরিক্ত টাকার উপর ১.১৬% দিতে হবে কর্মীকে। উল্লেখ্য, ইপিএস-৯৫ প্রকল্প চালু হওয়ার সময় থেকেই ওই তহবিলে ১.১৬% অনুদান দেয় কেন্দ্র।
সুপ্রিম কোর্ট সেই ১.১৬% জমার শর্তও খারিজ করেছে। বলেছে, রায় কার্যকর করতে ছ’মাস পাবেন পিএফ কর্তৃপক্ষ। তার মধ্যেই ১.১৬% সংস্থানের উপায় ভাবতে হবে।
কর্মী পক্ষের আইনজীবী জয়ন্ত মুখুরাজ বলেন, মূলত তিনটি বিষয়ে শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছে। প্রথমত, ২০১৪-র ১ সেপ্টেম্বরের আগে যাঁরা বর্ধিত পেনশন প্রকল্পে যোগ দেওয়ার যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও দেননি, তাঁরা এখন যোগ দিতে পারবেন। দ্বিতীয়ত, যাঁরা ওই প্রকল্পে যোগ না দিয়ে ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বরের আগেই অবসর নিয়েছেন, তাঁরা ওই প্রকল্পে আর যোগ দিতে পারবেন না। তৃতীয়ত, সদস্যকে পেনশন তহবিলে অতিরিক্ত বেতনের উপর ১.১৬% টাকা দিতে হবে না।